ফয়েজ আহমেদ। প্রথমবারের মতো গুচ্ছ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন। পরীক্ষার ফলাফল পেয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনও করছেন। তবে বাঁধ সেধেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। বারবার চেষ্টা করেও বিশ্ববিদ্যালয়টির ভর্তি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে পারছেন না। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তিনি।

শুধু ফয়েজ আহমেদই নন। এমন আরও অনেক শিক্ষার্থীই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ওয়েবসাইট সংক্রান্ত বিভিন্ন জটিলতায় পড়ছেন। কেউ লগ ইন করতে পেরেছেন তো পরবর্তী ধাপে আর যেতে পারছেন না। আবার কেউ কেউ একাধিকবার টাকা পরিশোধ করেও 'পেমেন্ট স্লিপ' পাচ্ছেন না। কারও আবার দেখাচ্ছে সার্ভার সমস্যা। এমন বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

দেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত গুচ্ছভুক্ত ২০টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর গত ২০ নভেম্বর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে শুরু থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে আবেদন করতে গিয়ে নানা জটিলতায় পড়ছেন ভর্তিচ্ছুরা। এমন অন্তত নয়জন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হয়েছে ঢাকা পোস্টের। যারা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে গিয়ে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।

ফাহাদ হোসাইন নামে এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, আমি দু’বার টাকা পরিশোধ করেছি। তবুও আমার পেমেন্ট সাকসেসফুল দেখাচ্ছে না। অথচ আমার ফোন থেকে ঠিকই দু’বার টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে।

ফয়েজ উল্লাহ নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, অনেকবার চেষ্টার পর আমি লগ ইন করতে পেরেছিলাম। তবে সার্ভার এরর দেখানোর কারণে আমি পেজ রিফ্রেশ দিলে শুধুমাত্র 'এ' ইউনিটে আমার আবেদন সাবমিট হয়ে গেছে। যেখানে আমি 'বি' ইউনিটেও আবেদন করতে চেয়েছিলাম।

সামিরা আহমেদ নামে আরেকজন বলেন, বেশ কয়েকবার আমি ওয়েবসাইটে প্রবেশের চেষ্টা করেছি। একবার লগইন পেজ আসে তো আরেকবার সার্ভার এরর দেখায়। এভাবেই গত তিনদিন কেটে গেছে। এদিকে ৩০ তারিখে আবেদনের সময় শেষ হয়ে যাবে। আমি এখনো আবেদন করতে পারিনি।

তবে এসব সমস্যা তৈরি হওয়ার পেছনে ওয়েবসাইটের ট্রাফিককে দায়ী করেছেন ভর্তি পরীক্ষা ২০২০-২১ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য সচিব ও কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক পার্থ চক্রবর্তী।

পার্থ চক্রবর্তী বলেন, আমরা ১০০ জিবি ব্যান্ডউইথ নেওয়ার পরও সার্ভার সমস্যা তৈরি হয়েছে। মূলত আমাদের ডেডিকেটেড সার্ভার না থাকায় এবং সবাই প্রায় একই সময়ে ওয়েবসাইটে প্রবেশের চেষ্টা করায় জটিলতা তৈরি হয়েছে।

পেমেন্টের বিষয়ে তিনি বলেন, ৩০ তারিখের পর আমরা ডাটাবেস নিয়ে বসবো। সেখানে যাদের ডাবল পেমেন্ট পাওয়া যাবে তাদের রিটার্ন করে দেওয়া হবে।

কোটা, ইউনিট এবং অন্যান্য বিষয়ে যাদের ভুল ইনপুট জমা হয়েছে তাদের ব্যাপারে পার্থ চক্রবর্তী বলেন, আবেদন শেষ হওয়ার পর আমরা সবাইকে এডিটের সুযোগ দিব। সে সময় তারা তা এডিট করে নিতে পারবে।

এরপরও যারা আবেদন করতে পারছেন না, তাদেরকে আরও সময় দেওয়া হবে কিনা- এমন প্রশ্নে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সদস্য সচিব ও বিশ্বিবদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক মো. আবু তাহের বলেন, আবেদনের সময়সীমা বাড়ানো হবে কিনা এমন কোনো সিদ্ধান্ত এখনো নেওয়া হয়নি। তবে আমরা বিষয়টি ভেবে দেখব।

সার্বিক বিষয়ে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক ড এমরান কবির চৌধুরীর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোনকল ও ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

মহিউদ্দিন মাহি/আরআই