ইনসেটে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের বাসভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার পর প্রায় ১২ ঘণ্টা কেটে গেছে। শিক্ষার্থীরা তার পদত্যাগের দাবিতে রোববার সন্ধ্যার দিকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।

সোমবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে সরেজমিনে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীরা মানবপ্রাচীর তৈরি করে রেখেছেন। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না তারা।

রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে মশাল মিছিল ও কুশপুতুল দাহ করেন। বিকেল থেকে শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে মানবপ্রাচীর তৈরি করে অবস্থান নেন।

বাসভবন ঘেরাও কর্মসূচি শুরু করার পর শিক্ষার্থীরা জানান পরিস্থিতি যেভাবে এগোচ্ছে, এতে তাদের বাধ্য করা হচ্ছে আরো কঠোর কর্মসূচির দিকে যেতে। তারা বলেন, উপাচার্যের বাসভবনে পুলিশ ছাড়া কেউ ঢুকতে পারবে না।

রাতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষে নাফিসা আনজুম বলেন, আমাদের অনশনরত ভাই-বোনেরা যখন অনশনে কষ্ট করছেন, ভিসি তখন আরামে দিন কাটাচ্ছেন। এটা আমরা মেনে নিতে পারছি না। আন্দোলনের অংশ হিসেবে উপাচার্যের বাসভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত প্রতিদিনই আন্দোলনে উপাচার্যের কুশপুতুলে আগুন দেওয়া হবে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে অনশনরত শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে যা করা দরকার, অনতিবিলম্বে তা করতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করে বিবৃতি দিয়েছে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শনিবার দিবাগত রাতে শিক্ষামন্ত্রী ভার্চুয়ালি আলোচনা করেন। তবে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে অনড় থাকেন। আলোচনায় কোনো সমাধান আসেনি।

শা‌বিপ্রবির শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সূত্রপাত ১৩ জানুয়ারি। সেদিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েকশ ছাত্রী। গত শনিবার ছাত্রীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ।

পরদিন বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা ও তাদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। ওই দিন রাত সাড়ে আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও হল ছাড়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও হল ছাড়ার ঘোষণা উপেক্ষা করে উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকা, রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর, খুলনা ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ।

জুবায়েদুল হক রবিন/আরএইচ