গোপালপুরে জোরপূর্বক ইভিএমে নৌকায় ভোট নেওয়ার অভিযোগ
টাঙ্গাইলের গোপালপুর পৌরসভা নির্বাচনে ইভিএমে জোরপূর্বক নৌকা প্রতীকের বাটনে টিপ দিয়ে ভোট নেওয়া ও এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার গিয়াস উদ্দিন। রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ অভিযোগ করেন।
ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার গিয়াস উদ্দিন বলেন, কেন্দ্রগুলোতে আমাকেই প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ক্ষমতাসীনরা। এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। ভোটারদের জোরপূর্বক নৌকা প্রতীকে টিপ নিচ্ছে। বহিরাগত অনেক লোকজন কেন্দ্রগুলোতে রয়েছে। নির্বাচনে নিজেই নিরাপদ নই। আমার লোকজনকে কীভাবে নিরাপদ রাখবো। ব্যাচ করিনি যাতে মানুষজন নিরাপদে ভোটটা দিয়ে আসতে পারে। ১৩টি কেন্দ্র থেকে আমার এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। তারা বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রগুলোতে নৌকার লোকজন দাঁড়িয়ে থেকে নৌকা প্রতীকে আগে ভোট নিচ্ছে। এরপর কাউন্সিলর প্রার্থীদের। কেন্দ্রের সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা ম্যানেজ হয়ে গেছেন। তারা আমাকে বলেছেন- আমাদের কিছু করার নাই। নির্বাচন শেষে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হবে।
টাঙ্গাইল জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা এএইচএম কামরুল হাসান বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর কোনো অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। সকাল থেকে ভোট গ্রহণ সুষ্ঠু ও সুন্দর হচ্ছে। কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি ভালো। এই পৌরসভায় ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
গোপালপুর পৌরসভা নির্বাচনে চারজন মেয়র প্রার্থী ছাড়াও নয়টি ওয়ার্ডে পুরুষ কাউন্সিলর প্রার্থী ৪১ জন ও ৯ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী অংশ নিয়েছেন। পৌরসভায় ভোটার সংখ্যা ৪০ হাজার ৭৩৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২০ হাজার ১০২ জন ও নারী ভোটার রয়েছেন ২০ হাজার ৬৩৩ জন। মোট ১৮টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে।
এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের রকিবুল হক ছানা, বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের জাহাঙ্গীর আলম রুবেল, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রাথী (স্বতন্ত্র) নারিকেল গাছ প্রতীকের ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার গিয়াস উদ্দিন ও বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী (স্বতন্ত্র) জগ প্রতীকের শাজাহান আলী মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর প্রথম ধাপে দেশের ২৪টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর দ্বিতীয় ধাপে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি ৬১ পৌরসভায় ও তৃতীয় ধাপে ৬২ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ১৪ ফেব্রুয়ারি চতুর্থ ধাপে ৫৫টি পৌরসভায় নির্বাচন হচ্ছে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম ধাপে দেশের ৩১টি পৌরসভায় নির্বাচন হবে।
তিন ধাপে আওয়ামী লীগের ৬৯ জন, বিএনপির ৯ জন ও স্বতন্ত্র ২৫ জন প্রার্থী মেয়র পদে বিজয়ী হয়েছেন। দলীয় প্রতীকে এ নির্বাচনে মেয়র পদে তৃতীয় ধাপে আওয়ামী লীগের ৪৬ জন, বিএনপির তিনজন ও স্বতন্ত্র ১৪ জন বিজয়ী হন।
দ্বিতীয় ধাপে আওয়ামী লীগের ৪৫ জন, বিএনপির চারজন, জাতীয় পার্টির একজন, জাসদের একজন ও আটজন স্বতন্ত্র প্রার্থী মেয়র পদে বিজয়ী হন।
প্রথম ধাপে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থীদের মধ্যে ১৮ জন, বিএনপির ধানের শীষের দুইজন এবং তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থী মেয়র পদে বিজয়ী হন।
অভিজিৎ ঘোষ/আরএআর