কুষ্টিয়ায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে কলেজশিক্ষক তোফাজ্জেল বিশ্বাসের (৫২) ডান হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন ও হত্যাচেষ্টা মামলায় জড়িত অভিযোগে সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। শনিবার (০৪ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে র‌্যাব-১২ কুষ্টিয়া সিপিসি-১ ক্যাম্পের কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার ইলিয়াস খান সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে শুক্রবার রাতে জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩ রাউন্ড গুলি, ম্যাগজিনসহ একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তাররা হলেন- কুমারখালী উপজেলার শালঘর মধুয়া গ্রামের সলেমানের ছেলে মোশারফ হোসেন মশা (২৬), মোকাদ্দেস হোসেনের ছেলে নাজিম উদ্দিন (২৭), আব্দুল খালেকের ছেলে সামাদ (২৭), আইয়ুব আলীর ছেলে মুহাইমেন হোসেন (২৭), সামেদ আলীর ছেলে হালিম (৪০), আব্দুল খালেকের ছেলে পলাশ (২৩) ও গোপাল শেখের ছেলে মুকুল (৪২)। তারা সবাই একই গ্রামের বাসিন্দা।

কুষ্টিয়া ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ ইলিয়াস খান জানান, কলেজশিক্ষক তোফাজ্জেল হোসেন কুমারখালী বাঁশগ্রাম কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। তিনি কুমারখালী বাগুলাট ইউনিয়নের শালঘর মধুয়া এলাকার জালা বিশ্বাসের ছেলে। দীর্ঘ দিন ধরে স্থানীয় আধিপত্যকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে বিবাদমান দ্বন্দ্বের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। জড়িতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

এর আগে ৩১ মে দুপুর ২টার দিকে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার জিয়ারখী ইউনিয়নের বংশীতলা নতুন সেতুর ওপর প্রতিপক্ষের লোকজনের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে কলেজশিক্ষকের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়। এছাড়া এলোপাতাড়ি কোপে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখম হয়েছে। এ ঘটনায় ১ জুন কুষ্টিয়া মডেল থানায় আহত কলেজশিক্ষকের ছেলে নাজমুস সাকিব বাদী হয়ে ২৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৫-৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। 

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৩১ মে দুপুরে কুমারখালী উপজেলার বাঁশগ্রামের আলাউদ্দিন আহমেদ ডিগ্রি কলেজ থেকে কুষ্টিয়া শহরে ফিরছিলেন তোফাজ্জেল বিশ্বাস। এ সময় সদর উপজেলার বংশীতলা নতুন ব্রিজের ওপর রাস্তার কাজে ব্যবহৃত রোলার মেশিন দাঁড়ানো ছিল এবং সেই রোলার মেশিনের পেছনে পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক আগে থেকেই এজাহার নামীয় আসামিরা লুকিয়ে ছিল। ঘটনাস্থলে তোফাজ্জেল হোসেন মোটরসাইকেলযোগে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে তার পথরোধ করে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা করে। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার ডান হাতের কবজি কেটে দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। 

আহত শিক্ষকের ছেলে নাজমুস সাকিব হাসিব বলেন, বাবাকে নিয়ে গত মঙ্গলবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছি। শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে কিছুটা উন্নত হয়েছে। আমরা মামলা করেছি। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই। 

রাজু আহমেদ/এসপি