আসামিদের আদালত থেকে কারাগারে নেওয়া হচ্ছে

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে গৃহবধূ রুবা আক্তার (১৮) হত্যা মামলায় ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ সময় প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় কিশোরগঞ্জের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আব্দুর রহিম আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।

নিহত গৃহবধূ রুবা আক্তার করিমগঞ্জ উপজেলার ভাটিয়া মোড়লপাড়ার এলাকার মৃত আবু বকর সিদ্দিকীর মেয়ে।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, করিমগঞ্জ উপজেলার ভাটিয়া মোড়লপাড়ার মো. তাহেরের ছেলে লুৎতু (৩০), মৃত মীর হোসেনের ছেলে মো. সোহরাব (৪৫), তার ছেলে মো. শরিফ (২২) ও তার স্ত্রী মোছা. জোসনা (৪০) এবং মৃত ফালু মিয়ার ছেলে মুসলিম (৫৫) এবং তার স্ত্রী নূর নাহার (৪০)।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ২০১১ সালে মে মাসের দিকে করিমগঞ্জ উপজেলার ভাটিয়া মোড়লপাড়ার গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে মো. শামীমের সঙ্গে বিয়ে হয় রুবা আক্তারের। প্রথমে স্বামী শামীম ও তার দুই চাচা সোরাব ও মুসলিম এ বিয়েতে রাজি ছিলেন না। পরে দাদা দাদির অসিয়ত রক্ষায় রুবাকে বিয়ে করেন শামীম। বিয়ের ১৫ দিন পর একই বছরের জুন মাসের ৩ তারিখে শামীম তার শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে খবর দেয় রুবা ঘরে নেই।

রুবার নিখোঁজের খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে রুবার বড় ভাই আলামিন রুবার খোঁজে শামীমদের বাড়িতে যায়। সেখানে গিয়ে রুবাকে না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়ে। রাত পৌনে ২টার দিকে শামীমের বাড়ির পাশের ডোবায় রুবার মরদেহ দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে শামীমে বাড়িতে নিয়ে আসে। 

ধারণা করা হচ্ছে, ওই দিন রাতের যে কোনো সময় রুবাকে হত্যা করে মরদেহ গুম করে বাড়ির পাশের ডোবায় ফেলে রাখা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে করিমগঞ্জ থানায় নিয়ে আসে।

এ ঘটনার একদিন পর ৪ জুন নিহত গৃহবধূ রুবা আক্তারের বড় ভাই মো. আলামিন বাদী হয়ে রুবার স্বামী মো. শামীমসহ ৭ জনকে আসামি করে করিমগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। 

দীর্ঘ তদন্ত শেষে একই বছরের ৩০ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা করিমগঞ্জ থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) খোন্দকার শওকত জাহান ৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত বিচার প্রক্রিয়া শেষে আজ রায় ঘোষণা করেন। 

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দ শাহজাহান এ রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট অশোক সরকার মামলাটি পরিচালনা করেন।

এসকে রাসেল/এসপি