সিলেটে ব্যাংক কর্মকর্তা হত্যা মামলার প্রধান আসামির আত্মসমর্পণ
নিহত ব্যাংক কর্মকর্তা মওদুদ আহমদ
সিলেটে ব্যাংক কর্মকর্তা মওদুদ আহমদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি অটোরিকশা চালক নোমান আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। তাকে কারগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতের বিচারক সাইফুর রহমান। বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে নোমান আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন দিলু বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা পোস্টকে জানান, আসামি নিজে আদালতে এসে আত্মসমর্পণ করেছেন। তার জামিন চাইলে বিচারক সাইফুর রহমান জামিন নামঞ্জুর করেন। তবে এ সময় বাদীপক্ষের কোনো আইনজীবী বা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে উপস্থিত না থাকায় আসামির রিমান্ড আবেদন করা হয়নি। শুনানির পর আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বিজ্ঞাপন
গত শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সিলেট নগরীর কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় ভাড়া নিয়ে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে ব্যাংক কর্মকর্তা মওদুদ আহমদকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক নোমান ও তার সহযোগীরা। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। পরদিন নিহতের ভাই বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন।
নিহত মওদুদ আহমদ ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার টেংগুরিপাড়া গ্রামের আবদুল ওয়াহেদের ছেলে। তিনি সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় অগ্রণী ব্যাংকের হরিপুর গ্যাস ফিল্ড শাখায় অফিসার (ক্যাশ) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
এদিকে সিলেটে মওদুদ হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলনে নামেন তার সহকর্মী ব্যাংকার ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। গতকাল মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সারাদিন সিলেটের বেশ কিছু স্থানে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তারা। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন তারা।
কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম আবু ফরহাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ব্যাংক কর্মকর্তা মওদুদ হত্যার প্রধান আসামি অটোরিকশা চালক নোমানকে ধরার জন্য আমরা প্রতিনিয়তই অভিযান চালিয়েছি। এমনকি শ্রমিক নেতাদের ওপরেও আমরা চাপ সৃষ্টি করেছি। পরবর্তীতে শ্রমিক নেতারা তাকে আদালতে হাজির করেছেন। তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এদিকে ব্যাংক কর্মকর্তা মওদুদ হত্যার নিন্দা জানিয়ে সিলেট নগরীর চৌহাট্টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন যাত্রী অধিকার পরিষদ। মানববন্ধনে তারা পাঁচটি দাবি উত্থাপন করেন।
দাবিগুলো হচ্ছে- গণপরিবহনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ দ্বারা যাত্রীদের সঙ্গে অসদাচরণ ও হয়রানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, মওদুদ আহমদের পরিবারের আর্থিক নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা, ভাড়ার তালিকা একটি গণপরিবহনে থাকার ব্যবস্থা করা, ভাড়া নির্ধারণে সাধারণ যাত্রীদের মতামতকে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং প্রশিক্ষণ ও লাইসেন্সবিহীন চালকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন কলেজ শিক্ষক পরিষদ নেতা জ্যোতিষ মজুমদার, যাত্রী অধিকার পরিষদ নেতা সুব্রত রায়, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ইমাদ উদ্দিন, শিক্ষক ইমরান আহমদ প্রমুখ।
তুহিন আহমদ/আরএআর