ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় কারাগারে মাদ্রাসা সুপার
আমিনুল হক
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাগারে গেলেন কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার শ্যামপুর দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার সুপার আমিনুল হক (৪২)। কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় পাতুয়াইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদকে কটাক্ষ করে ফেসবুকে পোস্ট দিলে তার নামে এই মামলা দায়ের করা হয়।
প্রধান শিক্ষকের দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ২টার দিকে মিঠামইন উপজেলার ধলাই গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে মাদ্রাসার সুপারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বিজ্ঞাপন
গ্রেপ্তার আমিনুল হক উপজেলার গোপদিঘী ইউনিয়নের ধলাই গ্রামের জাফর আলীর ছেলে। আর মামলার বাদী হারুন অর রশিদ একই গ্রামের আবুল হাসিমের ছেলে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার পরিদর্শক (ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড কমিউনিটি পুলিশিং) জয়নাল আবেদীন এ বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞাপন
মাদ্রাসা সুপার মো. আমিনুল হকের বিরুদ্ধে তিনি ফেসবুকে মানহানিকর তথ্য-উপাত্ত প্রচার এবং এলাকায় পারস্পরিক সম্প্রীতি নষ্ট করে বিশৃংখলা সৃষ্টির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলাটি করা হয়।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা গেছে, মিঠামইন উপজেলার গোপদিঘী ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামে ১৯৯৯ সালে শ্যামপুর দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০১০ সালে মাদ্রাসাটি এমপিওভুক্ত হয়। এ অবস্থায় সুপার মো. আমিনুল হক ও মাদ্রাসার সভাপতির মধ্যে এলাকার স্থানীয় প্রভাব নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়।
এই দ্বন্দ্বের জের ধরে সুপার আমিনুল হক ২০১০ সালে মাদ্রাসার টিনশেড ঘরটি খুলে নিয়ে তার বাড়ির পাশে ধলাই বাজারে স্থাপন করায় বর্তমানে নির্ধারিত স্থানে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির কোনো অস্তিত্ব নেই।
সুপার মো. আমিনুল হক মাদ্রাসার ঘরটি নিয়ে যাওয়ার পর থেকে এলাকাবাসী নির্ধারিত স্থানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি পুনর্নির্মাণ করার জন্য দাবি করে আসছেন।
প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদের বাড়ি একই গ্রামে হওয়ায় তিনিও এলাকাবাসীর সাথে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি পূর্বের জায়গায় ফিরিয়ে আনার দাবিতে ফেসবুকে পোস্ট দেন। তার এই পোস্টের কারণে মাদ্রাসা সুপার মো. আমিনুল হক ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে শিক্ষক হারুনকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং তার বিরুদ্ধে মানহানিকর তথ্য-উপাত্ত প্রচার করেন।
কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুবকর সিদ্দিক বলেন, প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার রাত ৮টা ২৫ মিনিটে থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়।
তিনি আরও বলেন, রাত ২টার দিকে জেলার মিঠামইন উপজেলার গোপদিঘী ইউনিয়নের ধলাই গ্রামে অভিযান চালিয়ে আসামিকে গ্রেপ্তার করে কিশোরগঞ্জ নিয়ে আসা হয়। বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এসকে রাসেল/এমএসআর