ভোটারদের সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টিতে ভৈরবে চলছে ভোট
ভৈরবে একটি কেন্দ্রে ভোটারদের ভিড়/ ছবি: ঢাকা পোস্ট
অভিযোগ আর সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টিতে চলছে ভৈরব পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। সকাল থেকেই ভোটারদের ব্যাপক উপস্থিতি কেন্দ্রগুলোতে। ভোট দেওয়ার আনন্দও দেখা গেছে কিছু ভোটারের মধ্যে। নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সমর্থকদের মাঝেও দেখা গেল নির্বাচনী আমেজ। তবে অভিযোগ ও অসন্তুষ্টির কথা জানালেন বিরোধীদলের সমর্থক ও এজেন্টরা।
রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার এ পৌরসভার বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেল এমন চিত্র। প্রথমবারের মতো ভৈরব পৌরসভার ভোটারেরা ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট দিচ্ছেন।
বিজ্ঞাপন
ভৈরব পৌরসভার মো. রফিকুল ইসলাম মহিলা মহাবিদ্যালয় (২০ নং) পুরুষ কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, উৎসাহ আর আনন্দ নিয়ে তরুণ থেকে বৃদ্ধ সবাই ভোট দিচ্ছেন। ভোটারের উপস্থিতিও অনেক। তবে ভোটের বুথের পরিস্থিতি অনেকটাই খোলামেলা।
বুথ থেকে বেরিয়ে আলাপকালে একাধিক ভোটার এ প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থীর এজেন্টরা ভোটারদের নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে বলছেন। অভিযোগ করে অনেকটা ক্ষিপ্ত হয়ে বুথ থেকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায় ধানের শীষ প্রতীকের এজেন্ট হিরু মিয়াকে।
বিজ্ঞাপন
৭ নম্বর ওয়ার্ডের এ এজেন্ট ঢাকা পোস্টকে অভিযোগ করে বলেন, ভোটাররা তো ইচ্ছা মতো ভোট দিতে পারছেন না। ভোটারকে জোর করে নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে বলছেন তারা (নৌকা প্রতীকের এজেন্ট)। এভাবে ভোট হলে তো আমাদের থাকার দরকার নাই। কেউ আমাদের কথা শুনছে না।
ভোট কেন্দ্র থেকে বের হয়ে ভোটার আব্দুল মান্নান জানালেন, অনেক সুন্দর পরিবেশে ভোট হচ্ছে। ৭০ বছর বয়সী এ ভোটার ভোটগ্রহণের প্রক্রিয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেন। বলেন, ‘অনেক সহজেই ভোট দিলাম। খুব ভালো লাগছে। কোনো ঝামেলা নেই। পরিবেশ অনেক সুন্দর।’
সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেন মাসুম নামের আরেক ভোটারও। তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠুভাবে ভোট হচ্ছে। কেউ কাউকে কোনো কিছুতে বাধা দিচ্ছে না। এমন পরিবেশে ভোট দিতে পেরে আমি খুশি।’
হাজী জমির আলী নামের একজন ভোট দেওয়ার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, ‘ভোট দেওয়ার মেশিন বাইরে নিয়ে এসে আমাকে একজন বলেছেন ভোট দিতে। আমি রাজি হইনি। বলেছি, এখানে কেন? আমি গোপন কক্ষে গিয়ে ভোট দেব। অনেক তর্ক করার পর গোপন কক্ষে ভোট দিতে পেরেছি।' এভাবে ভোটারদের ওপর জোর করায় অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এ ভোটার।
এদিকে হাজী আসমত মহিলা কলেজ কেন্দ্রে খোঁজ নিয়ে বিএনপির মেয়রপ্রার্থীর কোনো এজেন্ট পাওয়া যায়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ভোটার জানালেন, তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করায় তারা চলে এসেছেন। ভোটের পরিবেশ খুব বেশি ভালো না। তবে ওই কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি অনেক দেখা গেছে।
ভৈরব উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, এ পৌরসভায় মোট ভোটার ৭৯ হাজার ৭১৩ জন। এর মধ্যে ভৈরবপুর বাজারে ২৪ হাজার ৩৫০ জন, চন্ডিবেরে ১৮ হাজার ২০০ জন, কমলপুরে ১৪ হাজার ৪৭০ জন, (পঞ্চবটি-আমলাপাড়া-ঘোড়াকান্দা-কমলপুর), জগন্নাথপুরে ১২ হাজার ৮২৫ জন, কালিপুরে ৯ হাজার ৮৬৮ জন ভোটার রয়েছেন। পুরুষ ভোটার ৩৯ হাজার ৪০৬ জন ও নারী ভোটার ৪০ হাজার ৩০৭ জন। ১২টি ওয়ার্ডে ৩৫টি ভোটকেন্দ্রে বুথ রয়েছে ২৪০টি।
মেয়র পদে তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন ৬৫ জন (সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডসহ)। মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ইফতেখার হোসেন বেনু নৌকা প্রতীক, বিএনপির প্রার্থী মো. শাহীন ধানের শীষ প্রতীক ও মোবাইল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
একে/এসএসএইচ