বরিশাল সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান সুজন ফেসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন। পারিবারিক বিষয় নয় তবে আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করে এ কথা বলেন তিনি। এ ঘটনায় সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে উল্লেখ করে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে জেলা ছাত্রলীগ।

শনিবার (১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হেয়ায়েত উদ্দিন সেরনিয়াবাত সুমন।

এর আগে শুক্রবার রাত ১১টার দিকে বরিশাল সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান সুজন তার ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে আসেন। ১১ মিনিটের লাইভে তিনি বিভিন্ন প্রসঙ্গ টেনে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এসময় সুজন বলেন, আমার আত্মহত্যার কারণ পারিবারিক নয়। পারিবারিকভাবে আমি সুখি আছি। তবে এমন অবস্থায় পড়েছি নিজের তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকেও বিষয়গুলো বলতে পারছি না।

লাইভে তিনি বলেন, আমার আত্মহত্যার কারণ রুটি রুজির জায়গা বন্ধ হয়ে যাওয়া। যে জায়গা থেকে আমার আয়ে সংসার চলতো সেই পথ শনিবার থেকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ওই জায়গা হারিয়ে ফেললে আমার আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই।

অবশ্য লাইভে আসার আরও দুই ঘণ্টা আগে ‘কাল হয়তো আত্মহত্যা করতে পারি? কারণটা ডায়েরিতে লেখা থাকবে...। হে আল্লাহ তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও...’ লিখে স্ট্যাটাস দেন।

সুজন তার পোস্ট ও লাইভ বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুল, মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইজ আহম্মেদ মান্না, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মাইনুল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হেমায়েত উদ্দিন সেরনিয়াবাত সুমন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ উল ইসলাম সুমন, সাগর মেম্বার ও মাহাতাব হোসেন সুমনকে ট্যাগ করেন।

ওদিকে সুজনের লাইভ ছড়িয়ে পড়ার পর তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে জেলা ছাত্রলীগ। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হেমায়েত উদ্দিন সেরনিয়াবাত সুমন ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক সাক্ষরিত নোটিশে উল্লেখ করা হয়, সুজনের বক্তব্যে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙের কারণে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা তিন কার্যদিবসের মধ্যে জানতে চাওয়া হয়েছে।  

বরিশাল মেট্রোপলিটন বন্দর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান বলেন, লাইভটি আমি দেখেছি এবং সুজনের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তাকে মোবাইলে পাওয়া যায়নি। এছাড়া সুজনের সঙ্গে ঢাকা পোস্টের পক্ষ থেকেও কথা বলার চেষ্টা করা হলেও কল রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

জানা গেছে, বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া বাসস্ট্যান্ডের একটি অংশ ও চরকাউয়া খেয়াঘাট নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দলীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় সুজনের। এ কারণে আত্মহত্যার হুমকি দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/এমএএস