রংপুরে হিমেল হাওয়ার সঙ্গে ভাসছে কুয়াশা
রংপুরে আলো জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন
ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে রংপুর। হিমেল হাওয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। আলো জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন। উষ্ণতা পেতে ঘরে-বাইরে শরীরে উঠেছে মোটা কাপড়। যেন জেঁকে বসেছে হাড়কাঁপানো শীত।
সোমবার (৭ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর নগরের কয়েকটি এলাকা ঘুরে শীত মৌসুমের প্রথম ধাক্কাটা এমনটাই দেখা গেছে। সাতসকালে কাজের প্রয়োজনে বের হওয়া মানুষের সঙ্গে চাকরিজীবীদেরও পড়তে হচ্ছে বিপাকে। কারণ সড়কে কমেছে হালকা যানবাহন চলাচল।
বিজ্ঞাপন
পর্যাপ্ত যানবাহন না থাকায় অনেকেই গন্তব্যের দিকে হেঁটে হেঁটে পা বাড়িয়েছে । আর দূরপাল্লার বাস-ট্রাকগুলো চলছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। শীতের সকালে ছিন্নমূল ও নিম্নআয়ের মানুষের জীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ। কোথাও কোথাও সড়কে, অলিগলি আর খোলা জায়গায় খড়কুটো জ্বালিয়ে চলছে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন মানুষ।
মাঘ আসতে বাকি আরও ১ মাস আটদিন। কিন্তু ঘরের বাইরে বের হওয়া মানুষের কাছে এ যেন মাঘের আগাম কুয়াশার প্রকোপ। হিমেল হাওয়ায় সঙ্গে ঝিরিঝিরি জলফোঁটায় ভিজে গেছে প্রকৃতির বুক। দিগন্তজোড়া মাঠে প্রতিদিনের মতো কাজে ব্যস্ত কৃষান-কৃষানি। শীতের সকালে সবুজের ক্ষেতবুননে তাদের কাছে লাপাত্তা শীত। তবে ছিন্নমূল ও নিম্নআয়ের মানুষের জীবনের পাশাপাশি গবাদি পশুপাখিও টের পাচ্ছে শীতের ঝাঁঝ।
বিজ্ঞাপন
রোববার (৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর কুয়াশা পড়তে শুরু করে। সময় যত গড়িয়েছে ততোই যেন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ে রংপুরের চারপাশ। নগর-বন্দর, হাট-বাজার— সবখানেই মধ্যরাত থেকে ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়ে। ভোরে কিছুটা কুয়াশা কমলেও হেডলাইটের আলোছাড়া ভালো দেখাচ্ছে না সড়ক।
এদিকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশ কিছুটা পরিস্কার হতে দেখা যায়। তবে বেলা ১১টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। তাপমাত্রার তেমন একটা উন্নতিও হয়নি। ফলে স্থবির হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
শহর থেকে একটু দূরে— গ্রামে থাকা ছিন্নমূল, অসহায় ও দরিদ্র পরিবারগুলো শীতবস্ত্রের অভাবে দুর্ভোগে পড়েছেন বেশি। অনেকের শীতবস্ত্র কেনার মতো সামর্থ্যও নেই। তাই খড় ও শুকনা পাতা কুড়িয়ে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন তারা।
তাদের অনেকে জানায়, রাতের বেলায় গুড়িগুড়ি বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝড়ছে। ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় শিশু ও বৃদ্ধদের অবস্থা নাকাল। আগাম শীতের প্রকোপ মোকাবিলায় প্রস্তুতি না থাকায় অনেকেই কষ্টে আছেন।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত রংপুরে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৬ দশমিক ৩।
তিনি আরও জানান, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে শীতের প্রকোপ বাড়বে। দিন দিন তাপমাত্রা কমতে থাকবে। এতে করে রংপুরের আশপাশ এলাকাগুলোতে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এসআর