পারিবারিক দ্বন্দ্বে বগুড়ায় শিশু হত্যা, গ্রেফতার ৪
পুলিশের সঙ্গে গ্রেফতার আসামিরা
পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বগুড়ার ধুনটে শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা বিপিএম তার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।
এর আগে শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় আসামিদের ধুনট উপজেলার নশরতপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
বিজ্ঞাপন
গ্রেফতাররা হলেন- একই এলাকার তোজাম্মেল হকের ছেলে স্থানীয় জিএমসি ডিগ্রি কলেজের বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র বাপ্পি আহমেদ (২২), দলিল উদ্দিন সরকারের ছেলে মুদি দোকানদার কামাল পাশা (৩৫), সানোয়ার হোসেনের ছেলে রাজমিস্ত্রী শামীম রেজা (২২) এবং মৃত সাহেব আলী শেখের ছেলে রংমিস্ত্রি লাবলু শেখ (২১)।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রিপন মিঞা বলেন, অনেক দিন ধরে গ্রেফতার বাপ্পির পরিবারের সঙ্গে নিহত শিশুর বাবার পারিবারিক দ্বন্দ্ব চলছিল। দ্বন্দ্বের কারণে আসামি বাপ্পি প্রতিশোধ নেয়ার জন্য তিন মাস আগ থেকে শিশুটিকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিন রাতে শিশু দাদা দাদি ও দুই ফুফুর সঙ্গে স্থানীয় জলসায় ওয়াজ শুনতে যায়।
বিজ্ঞাপন
রাত ৯টার দিকে জলসার পাশে শিশুটি বেলুন কিনতে গেলে আসামি তাকে বাদাম কিনে দেয়ার লোভ দেখায়। । এ সময় শিশুকে ফুসলিয়ে হাজী কাশেম জুবেদা টেকনিক্যাল কলেজ মাঠে নিয়ে যায়। সেখানে আগ থেকেই কামাল পাশা, শামীম রেজা ও লাবলু শেখ অবস্থান করছিল। এ সময় আসামিরা শিশুটিকে মুখ চেপে ধরে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে শিশুটি নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এ সময় বাপ্পি আগে গলাটিপে হত্যা করে।
হত্যার পর শিশুটির হাতের আঙ্গুল কাটিং প্লাস দিয়ে কেটে রাখে। যেন সবাই মনে করে তাকে কোন জন্তু কামড় দিয়ে মেরে ফেলেছে। হত্যার পর বাপ্পি মেয়েটির লাশ কাঁধে নিয়ে বাদশার বাঁশঝাড়ে ফেলে রেখে যায়। এরপর বাপ্পি বাড়ি চলে যায় এবং বাকি তিন আসামি জলসায় ফিরে ভলান্টিয়ারের দায়িত্ব পালন করে। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে আসামিদের নিজ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঁইয়া বিপিএম জানান, গ্রেফতার আসামিদের আদালতে পাঠানো হবে এবং আটদিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৪ ডিসেম্বর রাত দেড়টার দিকে ধুনট থেকে ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। নিহত শিশুর বাবা-মা ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করেন। সে দাদা-দাদির সঙ্গে নিজ গ্রামেই থাকত।
এসপি