ফুটফুটে শিশুটিকে নিয়ে বিপাকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ
শিশুটিকে কোলে নিয়ে বসে আছেন হাসপাতালের আয়া
মানসিক ভারসাম্যহীন তরুণীর (২২) ফুটফুটে ছেলে সন্তানকে নিয়ে বিপাকে পড়েছে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ২৬ দিন আগে জন্ম নেয়া শিশুটি হাসপাতালের নার্স ও আয়াদের কোলে বেড়ে ওঠছে। তবে মানসিক ভারসাম্যহীন তরুণীর কোনো স্বজনের দেখা মেলেনি।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের গাইনী বিভাগের ইনচার্জ সুফিয়া খাতুন জানান, কালিগঞ্জ থানা এলাকা থেকে উদ্ধার করে গর্ভবতী মানসিক ভারসাম্যহীন প্রসূতি নুরজাহান বেগমকে ভর্তি করা হয়। ১ ডিসেম্বর সদর হাসপাতালে একটি ফুটফুটে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন তিনি। জন্মের পর থেকেই শিশুটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাধায়নে রয়েছে। পাগলী মা শিশুটির কোনো খোঁজখবর রাখেন না। বিভিন্ন সময় হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান আবার ফিরে আসেন। কিছু বলতেও পারেন না।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে ভর্তির কাগজপত্রে মানসিক ভারসাম্যহীন নুরজাহান বেগমকে জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার মথুরাপুর এলাকার বাসিন্দা হিসেবে লেখা হয়েছে। তবে ভর্তির পর থেকে এখনও তার কোনো স্বজনের দেখা মেলেনি। প্রথম দিকে হাসপাতালের সমাজকল্যাণ বিভাগ থেকে শিশুটির দুধ দেয়া হতো। এখন আর দেয়া হচ্ছে না। এখন নার্স ও স্টাফরা মিলে দুধ কিনে খাওয়াচ্ছি। ফুটফুটে শিশুটিকে নিয়ে বিপাকে পড়েছি।
কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন বলেন, একজন গর্ভবর্তী পাগলী কালিগঞ্জ হাসপাতালের আশপাশে ঘুরছে- এমন ঘটনা পুলিশের দৃষ্টিতে আসার পর তাকে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়া ঘটনাটি সমাজসেবা অধিদফতর ও আদালতকে জানানো হয়। মানসিক ভারসাম্যহীন ওই তরুণীর একটি সন্তান হয়েছে। মা ও শিশুর জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আদালতের নির্দেশনা রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. মো. হুসাইন সাফায়াত বলেন, কালিগঞ্জের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নির্দেশনায় মানসিক ভারসাম্যহীন তরুণীকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের দেখভালের জন্য তিনজন প্রয়োজন। আমাদের জনবল কম হওয়ায় বিষয়টি আদালতকে জানানো হয়েছে। আদালত আরেকটি নির্দেশনা দিয়েছেন। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, মানসিক ভারসাম্যহীন মা শিশুকে লালন পালনে অক্ষম। মাকে চিকিৎসার জন্য পাবনা মানসিক হাসপাতাল ও শিশুকে খুলনা শিশু কল্যাণ সংস্থায় পাঠাতে হবে। স্বাস্থ্য বিভাগ, পুলিশ ও সমাজসেবা অধিদফতরের ওপর এই নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।
তিনি আরও বলেন, আমরা পুলিশ ও সমাজসেবা অধিদফতরের সঙ্গে ইতোমধ্যে যোগাযোগ করেছি। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই মা ও শিশুকে আদালতের নির্দেশনা মতো পাঠানো হবে। শিশুটিকে যারা দেখভাল করছেন তারা শিশুটিকে নুর ইসলাম নাম দিয়েছেন। কয়েকজন শিশুটিকে দত্তক নিতে আগ্রহী। তাদের খুলনা শিশু কল্যাণ সংস্থা ও খুলনা আদালতের শরণাপন্ন হতে বলা হয়েছে।
এসপি