নিহতের বাড়িতে আত্মীয়-স্বজন ও নেতাকর্মীদের ভিড়

নির্বাচনী প্রচারণায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তাওহীদুর রহমান সোহেল (৪৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও একজন। শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত ১১টার দিকে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ত্রিমোহনী বটতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত তাওহীদুর রহমান সোহেল উপজেলার ত্রিমোহনী বারখাদা এলাকার মীরপাড়ার বজলুর রহমান সরকারের ছেলে। আহত মাজহারুল ইসলাম রমজান একই এলাকার মৃত মেসবাহুল রহমানের ছেলে। তিনি কাউন্সিলর প্রার্থী মাহবুবুর রহমান পাখির বড় ভাই। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়া পৌরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং কাউন্সিলর পদপ্রার্থী রবিউল ইসলাম রবি আধিপত্য বিস্তার করতে প্রতিপক্ষ কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মাহবুবুর রহমান পাখির লোকজনের ওপর হামলা চালায়। 

এর আগে তাদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ বিরোধের জের ধরে প্রথমে কাউন্সিলর রবিউল ইসলাম রবির নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে কাউন্সিলর পদপ্রার্থী পাখি ও তার লোকজনদের ওপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের আক্রমণে সোহেল ও রমজান গুরুতর গুরুতর আহত হন। মুমূর্ষু অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত ২টার দিকে তাওহীদুর রহমান সোহেলের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় একই পক্ষের রমজান গুরুতর আহত অবস্থায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। 

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার তাপস কুমার সরকার বলেন, আহত রমজান কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। একই ঘটনায় তাওহীদুর রহমান সোহেল নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। 

নিহত সোহেলের বাবা বজলুর রহমান সরকার জানান, সংঘর্ষে আমার ছেলে গুরুতর আহত হয়ে মারা গেছেন। আমরা কোনো হামলা মামলায় যেতে চাই না। আমাদের তো পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে হবে। যা হওয়ার তা হয়ে গেছে।

ঘটনার পর এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এছাড়া ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। 

মাহবুবুর রহমান পাখি বলেন, রাতে নির্বাচনী অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং এবারের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী রবিউল ইসলাম রবির নেতৃত্বে তার ক্যাডার বাহিনীর রুবেল, শাহীন, খোকন, বাদশা, বসিরসহ প্রায় ৩০ জন আমাদের ওপর দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা দিয়ে হামলা চালায়।  

তাদের হামলায় আমার পক্ষের কর্মী তাওহীদুর রহমান সোহেলের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আমার বড় ভাই রমজান গুরুতর আহত অবস্থায় হসপিটালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার মাথায় ১৮টি সেলাই পড়েছে এবং ডান হাত ভেঙে গেছে। এছাড়া তার সারা শরীরে বেধড়ক মারপিট করেছে কাউন্সিলরের লোকজন। 

সংঘর্ষের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে রবিউল ইসলাম রবি বলেন, সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু আমাদের আঘাতে তার মৃত্যু হয়নি। আমাকে রাজনৈতিকভাবে ফাঁসানোর জন্য তারা এসব অভিযোগ করছে। 

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম সংঘর্ষের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের আটক করে আইনের কাছে সোপর্দ করা হবে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।

এসপি