১৬টি স্বর্ণের বারসহ গ্রেফতার জিতেন ধর

আপন ভাইয়ের ১৭টি  স্বর্ণের বার গায়েব করতে ছিনতাই নাটক করেছেন জিতেন ধর (৪৮) নামে এক ব্যক্তি। এই নাটকের পর একটি স্বর্ণের বার বিক্রিও করেছেন তিনি। পরে অভিযান চালিয়ে তার কাছ থেকে ১৬টি র্স্বণের বার উদ্ধার করেছে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ। 

অভিযুক্ত জিতেন ধর রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার জামনগর এলাকার দ্বীনেশ ধরের ছেলে। স্বর্ণের বারগুলোর মালিক জিতেন ধরের আপন ভাই দ্বিজেন ধর (৫০)। তিনি ফেনীতে থাকেন।

শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) সদর দফতরে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযানের আদ্যপান্ত জানায় পুলিশ।

আরএমপির মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, ফেনী থেকে ১৭টি স্বর্ণের বার নিয়ে গত ২১ ডিসেম্বর ভোরে নিজ বাড়ি পুঠিয়ায় আসেন দ্বিজেন ধর। পরে ভাই জিতেন ধরকে স্বর্ণের বারগুলো রাখতে দেন দ্বিজেন। প্রতিটি স্বর্ণের বারের ওজন ১০ ভরি। ১৭টি স্বর্ণের বারের মূল্য প্রায় এক কোটি ১২ লাখ ৭১ লাখ টাকা।

জিজ্ঞাসাবাদে জিতেন ধর পুলিশকে জানিয়েছেন,  তিনি এক কোটি ৪০ লাখ টাকারও বেশি ঋণগ্রস্ত। এতোগুলো স্বর্ণের বার হাতে পেয়ে সেগুলো আত্মসাতের পরিকল্পনা করেন তিনি। এ জন্য তিনি স্বর্ণের বারের পরিবর্তে তিনটি সিসার রড কাগজে স্কচটেপ দিয়ে পেঁচিয়ে স্বর্ণের বারের ব্যাগে রেখে দেন। আর আসল বারগুলো নিজের বাড়িতেই রাখেন। পরে তাকে সঙ্গে নিয়ে স্বর্ণের মালিক ও আপন ভাই দ্বিজেন রাজশাহী শহরে জুয়েলার্সের দোকানে স্বর্ণের বার বিক্রি করতে গেলে ছিনতাই নাটক সাজান।

জিতেন ও দ্বিজেন নগরীর শিরোইল এলাকায় পৌঁছামাত্র পরিকল্পনা মাফিক দুটি মোটরসাইকেল নিয়ে চারজন ব্যক্তি এসে নিজেদের ‘প্রশাসনের লোক’ পরিচয় দেন। তাদের কাছে থাকা হ্যান্ডকাপ দেখান। তারা জিতেনের কাছে থাকা ব্যাগটি জোর করে কেড়ে নেয়। মানিব্যাগ এবং দুটি মুঠোফোনও ছিনিয়ে নেয়। এই ঘটনায় দ্বিজেন ধর ওই দিনই নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় মামলা করেন। 

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, ছিনতাইয়ের নাটকটি সাজিয়েছিলেন জিতেন নিজেই। তার পরিকল্পনা মাফিক মিজানুর রহমান মিজান ও মৃদুল নামে দুই ব্যক্তি পুঠিয়া থেকেই বাসের পেছনে পেছনে মোটরসাইকেল নিয়ে আসেন।

তারা ব্যাগ ছিনতাইয়ের জন্য শহরে অন্য তিনজনকে মোটরসাইকেল নিয়ে প্রস্তুত রাখেন। জিতেন ও দ্বিজেন বাস থেকে নামামাত্রই অপেক্ষায় থাকা ব্যক্তিদের কাছে সংবাদ পৌঁছে দেন মিজান ও মৃদুল। এরপরই ব্যাগ কেড়ে নিয়ে পালিয়ে যান তারা হয়।

তবে আসল স্বর্ণের বারগুলো জিতেনের বাড়িতেই ছিল। এর মধ্যে একটি বার বিক্রিও করে দেন তিনি। পরে তদন্তে বিষয়টি ধরে ফেলে পুলিশ। ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার শেকড়ে যায় তদন্তকারী দল।

এরপর শুক্রবার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার হন জিতেন। সেখান থেকে উদ্ধার হয় ১৬টি স্বর্ণের বার। তবে জিতেনের সহযোগীরা পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।

আরএআর