সাবেক এম‌পি তোয়াবুর রহিম

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সাবেক গণপরিষদ সদস্য ও সাবেক এম‌পি তোয়াবুর রহিম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শুক্রবার (১ জানুয়ারি) ভোর ৫টার দিকে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। 

ব্রিটেনের আন্তর্জাতিক চ্যারিটি সংস্থা ইস্ট হ্যান্ডসের চেয়ারম্যান সাংবাদিক নবাব উদ্দিন সাবেক এম‌পি তোয়াবুর রহিমের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

তোয়াবুর রহিম ছিলেন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য, বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজারের রাজনগর ও কমলগঞ্জ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য। সাবেক এই সংসদ সদস্য স্বাধীনতার পর আর রাজনী‌তিতে সংশ্লিষ্ট থাকেননি। লন্ডনে স্থায়ী হন। সন্তান, না‌তি-নাতনিসহ পরিবারের সবাই অনেক বছর ধরে সেখানে বসবাস করছেন। 

আইয়ুব খানের কাউন্সিল মুসলিম লীগ থেকে ১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন তোয়াবুর রহিম। ১৯৭০ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে তিনি ভূমিকা রাখেন। মুক্তিযুদ্ধে কৈলাশহর যুব ক্যাম্পের প্রধান ছিলেন তিনি। ৩ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে তিনি চাতলাপুর বিওপিতে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। 

স্বাধীন বাংলাদেশে তিনি গণপরিষদ সদস্য ছিলেন। ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন সিলেট-১৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৬৫ সালে তিনি মনসুরনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। 

বিদেশে থাকলেও দেশে তি‌নি একজন বি‌শিষ্ট শিক্ষান‌ুরাগী হিসেবে পরিচিত। রাজনগরে হাজী ছালামত উচ্চ বিদ‌্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে‌ন। এলাকায় শিক্ষার বিস্তা‌রে আমৃত‌্যু অবদান রেখে গেছেন তোয়াবুর রহিম।  

এক শোক বার্তায় ব্রিটেনের আন্তর্জাতিক চ্যারিটি সংস্থা ইস্ট হ্যান্ডসের চেয়ারম্যান সাংবাদিক নবাব উদ্দিন বলেন, তোয়াবুর রহিম স্বাধীনতা সংগ্রামে ছিলেন সত্যিকারের একজন দেশ প্রেমিক। মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান ছিল অবিস্মরণীয়। ইতিহাসে তার নাম চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। আমি এই মহান ব্যক্তির জন্য দোয়া করি- আল্লাহ তায়ালা যেন তাকে জান্নাত দান করেন এবং তার পরিবারকে শোক সইবার শক্তি দেন।

আরএআর