আরিফুল ইসলাম

সাভারের আশুলিয়ায় বাড়িওয়ালার ছেলে রাজা মিয়াকে (০৯) অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি আরিফুল ইসলামকে (৩২) পাবনা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। হত্যার দুই মাস পর আরিফকে গ্রেফতার করা হলো।

রোববার (০৬ জুন) ভোরে পাবনার সুজানগর সদর থানার তারাবাড়ি গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে আশুলিয়া থানা পুলিশ।

জানা গেছে, একই এলাকার এক নারীর সঙ্গে আগেই কাবিন হয় আরিফুলের। শনিবার (০৫ জুন) রাতে তার বাসর হওয়ার কথা ছিল। এর আগে আরিফুলের আচরণে সন্দেহ হয় নববিবাহিত ওই নারীর ভাইয়ের। পরে খোঁজ খবর নিয়ে হত্যাকারী বলে নিশ্চিত হয়ে এলাকাবাসীর সহায়তায় আরিফুলকে আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে। এর আগে আরিফুল ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। ঘটনার দিন যে নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল তাকে স্ত্রী পরিচয়ে বাসায় রেখেছিলেন তিনি।

গ্রেফতার আরিফুল পাবনার সুজানগর থানার ভাতশালা গ্রামের তফিজ উদ্দিনের ছেলে। ঘটনার দিন স্ত্রী পরিচয়ে থাকা লিজা আক্তারকে (২২) গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা মার্চের প্রথম সপ্তাহে এই বাসার একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে পার্শ্ববর্তী পোশাক কারখানায় কাজ করতেন।

স্থানীয়রা জানায়, ২৮ মার্চ সন্ধ্যায় চা খাওয়ার কথা বলে আরিফুল রাজাকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে রাজাকে হত্যা করে মরদেহ হাত পা বেঁধে বস্তাবন্দি করে বেলকনিতে রেখে বাসা থেকে চলে যায় আরিফ। পরে রাজার বাবাকে ফোন করে ৫০ লাখ টাকা নিয়ে উত্তরায় যেতে বলেন আরিফ। রাজার বাবা আরিফুলের স্ত্রীকে আটকে রেখে থানায় খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে। একইসঙ্গে লিজাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায়।

পুলিশ জানায়, গত ২৮ মার্চ সন্ধ্যায় রাজা হঠাৎ করে নিখোঁজ হয়। ঘণ্টা দুয়েক পর রাজার বাবাকে ফোন দিয়ে অপহরণকারীরা ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। মুক্তিপণ চাইলে ভুক্তভোগীর বাবা থানায় খবর দিয়ে শিশুকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরে লোকমুখে জানতে পারেন তারই চারতলার ভাড়াটিয়া সন্ধ্যায় রাজাকে দোকান থেকে কি যেন কিনে দিয়ে সঙ্গে করে বাসায় নিয়ে যায়। 

এরপর থেকেই রাজাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এ সময় আরিফুলের কথিত স্ত্রীকে রাজার মা ও স্থানীয়রা ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে ওই ফ্ল্যাটের বেলকনিতে বস্তাবন্দি রাজার মরদেহ রাখা আছে বলে স্বীকার করেন। পরে পুলিশ কথিত আরিফুলের স্ত্রীকে আটক করে আদালতে পাঠায়। এর দুই মাস পর রোববার (০৬ জুন) ভোরে অভিযুক্ত আরিফুলকে গ্রেফতার করা হয়।

আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আল-আমিন জানান, দ্রুত স্থান পরিবর্তনের কারণে আরিফুলকে গ্রেফতারে বেগ পেতে হয়েছে। সে কখনো নারায়ণগঞ্জ, কখনো গাজীপুরের মাওনাসহ বিভিন্ন স্থান বদল করেছিল। পরে গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করলে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। রিমান্ড চেয়ে আজ দুপুরেই তাকে আদালতে পাঠানো হবে।

মাহিদুল মাহিদ/এসপি