নওগাঁয় আগাম আলুর দামে খুশি চাষিরা
ছবি: সংগৃহীত
নওগাঁর বাজারে নতুন জাতের আলুর ভালো দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। তবে শুরুতে আবহাওয়া প্রতিকূলে না থাকায় যেমন দেরিতে রোপণ করতে হয়েছে, তেমনি শীত ও কুয়াশার কারণে মড়ক দেখা দিয়েছে। এতে লাভের একটি অংশ কীটনাশক কিনতেই খরচ হয়ে যাচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় প্রায় ২২ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ করা হয়েছে। যেখানে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৮ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে আগাম আলুর আবাদ হয়েছে প্রায় ৯ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে। যেখানে সাদা পাপড়ি ৯৬০ হেক্টর, লাল পাপড়ি ৪ হাজার ৫২৫ হেক্টর এবং সাইটা জাতের আলু ৪ হাজার ১৬৫ হেক্টর। এ ছাড়া স্থানীয় জাতের আলুর আবাদও হয়েছে। গত বছর ২০ হাজার ৮৯০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ করা হয়েছিল।
বিজ্ঞাপন
গত বছর আলুর দাম ভালো পাওয়ায় এ বছর কৃষকরা আরও বেশি পরিমাণ জমিতে আলুর আবাদ করেছেন। আগাম আলুর উৎপাদন কিছুটা কম হয়। তবে বাজারে ভালো দাম পেয়ে কৃষকরা উপকৃত হচ্ছেন। এ বছর আলুর লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে।
মো. শামছুল ওয়াদুদ, উপপরিচালক, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর
সরেজমিন দেখা যায়, আলুর সবুজ পাতায় ছেয়ে আছে দিগন্তবিস্তৃত মাঠ। এমন দৃশ্য নওগাঁ সদর উপজেলার ছোট যমুনা নদীর চরে শ্যামপুর গ্রামের মাঠের। চাষিরা কোথাও খেত থেকে আলু তুলছেন, আবারও কোথাও মড়ক দমনে কীটনাশক প্রয়োগ করছেন। আগাম আলু কার্তিক মাসে রোপণ করা হয়। প্রায় দুই মাসে এই আগাম জাতের আলু পরিপক্ব হয়ে বাজারজাত করা হয়। বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা জমিতে গিয়ে গাছসহ আলু কিনে শ্রমিকদের দিয়ে আলু উত্তোলন করছেন।
বিজ্ঞাপন
সদর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের কৃষক সাজেদুর রহমান বলেন, ভালো দাম পাওয়ার আশায় কার্তিক মাসে এক বিঘা জমি প্রস্তুত করে আগাম জাতের পাপড়ি আলু রোপণ করেন। বীজ, হালচাষ, সার, ওষুধ ও শ্রমিকসহ বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার ১৮ হাজার টাকা। দুই থেকে আড়াই মাসের মধ্যে আলু পরিপক্ব হয়ে উঠতে শুরু করেছে। তিনি প্রায় ৩৫ মণের মতো ফলন পেয়েছেন। শুরুতে ২ হাজার টাকা মণ হলেও বর্তমানে প্রায় দেড় হাজার টাকায় মণ বিক্রি হচ্ছে। জমি থেকে আলু ওঠানোর পর সেই জমিতেই কপি ও পেঁয়াজ লাগানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এতে খরচও কম পড়বে।
একই গ্রামের আলুচাষি আনিছুর রহমান বলেন, আড়াই বিঘা জমিতে আলু লাগিয়েছেন। শুরুতে এ বছর আবহাওয়া প্রতিকূলে ছিল না। একদিকে ঘন বৃষ্টিপাতের কারণে আলু রোপণে বিলম্ব হয়েছে। অন্যদিকে প্রচণ্ড শীতের কারণে আগাম জাতের আলুতে মড়ক দেখা দিয়েছে। মড়কে আলুর পাতা কুঁকড়ে যাচ্ছে। মড়ক দমনে কীটনাশক দিচ্ছেন। এতে লাভের একটি অংশ কীটনাশক কিনতে খরচ হয়ে যাচ্ছে। তবে বাজারে ভালো দাম থাকায় লাভের মুখ দেখছেন তিনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শামছুল ওয়াদুদ বলেন, গত বছর আলুর দাম ভালো পাওয়ায় এ বছর কৃষকরা আরও বেশি পরিমাণ জমিতে আলুর আবাদ করেছেন। আগাম আলুর উৎপাদন কিছুটা কম হয়। তবে বাজারে ভালো দাম পেয়ে কৃষকরা উপকৃত হচ্ছেন। এ বছর আলুর লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে বলে মনে করেন তিনি।
এনএ