পদ্মা সেতু দেখতে আসা দর্শনার্থীর চিত্র

স্বপ্নের সেতু এখন বাস্তবের খুব কাছাকাছি। তাইতো দর্শনার্থীরা সেতুটাকে সামনে থেকে দেখার লোভ সামলাতে না পেরে ছুটছেন মুন্সিগঞ্জের মাওয়ায়। কেউ কেউ নির্মাণাধীন সেতুর সঙ্গে ছবি তুলে ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকতে চাইছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডের পাশে মাওয়া মৎস্য আড়তঘাটে দৃশ্যমান পদ্মা সেতু দেখার জন্য দর্শনার্থীরা আসছেন। সেতুর স্প্যান দেখে তারা অভিভূত হচ্ছেন। কেউ কেউ পদ্মা সেতুর স্প্যানসহ সেলফি তুলছেন। কেউ কেউ পদ্মার সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। অনেকেই ট্রলার এবং স্পিডবোটে পদ্মা সেতুর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাচ্ছেন।

ইতি সরকার নামে এক দর্শনার্থী জানান, তার বাবার বাড়ি মাদারীপুর। শ্বশুর বাড়ি কেরানীগঞ্জে। পদ্মা সেতুর শেষ স্প্যানটি বসানোর পর দুই পাড় জোড়া লেগেছে। সম্পূর্ণ জোড়া লাগানো সেতুটি দেখার তর সইছিল না। 

পদ্মা সেতুর স্প্যান দেখতে আসা কয়েকজন এনজিও কর্মী জানান, এর আগে তারা টিভি পত্রিকায় পদ্মা সেতুর স্প্যান বসানো দেখেছেন। বাস্তবে কখন দেখেননি। শেষ স্প্যান বসানোর পর তাদের আগ্রহ অনেকটাই বেড়ে যায়। এজন্য স্বচক্ষে দেখতে তারা মাওয়া প্রান্তে এসেছেন।

গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, পদ্মা সেতু এক সময় স্বপ্ন ছিল। একটি একটি স্প্যান বসে সে স্বপ্ন আজ সত্যি হয়েছে। সর্বশেষ স্প্যানটি বসানোর দৃশ্য স্বচক্ষে দেখার ইচ্ছে ছিল। আজ (১১ ডিসেম্বর) ছয়জন বন্ধু মিলে পদ্মা সেতুর স্প্যানগুলো দেখলাম। নির্মাণাধীন সেতুর সঙ্গে ছবি তুললাম। ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকলাম।

ট্রলার দিয়ে ঘুরে সেতুর মাওয়া প্রান্ত থেকে জাজিরা প্রান্তের সবগুলো স্প্যান দেখেছেন মিরপুর-১ এর বাসিন্দা তরিকুল ইসলাম। তরিকুল বলেন, সেতুর পিলার,স্প্যান ও গভীর পদ্মা কাছ থেকে দেখলাম। দেখার পর যে আনন্দ অনুভব হচ্ছে তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। বিকেল পর্যন্ত থাকবো। রাতে মাওয়ায় ইলিশ খেয়ে বাড়ি যাবো।

শামীম আহমেদ নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, স্বপ্নের পদ্মা সেতু দেখতে প্রতিদিন ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, কুমিল্লা, চাঁদপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ আসছে। মানুষের সমাগমে এলাকায় ঈদের মত মনে হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বেড়াতে আসা দেখে মনে হচ্ছে এ এলাকা দেশের অন্যতম একটি পিকনিক স্পট হতে পারে।

ট্রলার চালক গেন্দু সরদার বলেন, এক বছর আগেও নসিমন চালাতাম। পদ্মা সেতুর স্প্যানগুলো দৃশ্যমান হওয়ার পর থেকে মানুষ এখানে বেড়াতে আসতে শুরু করে। পদ্মা সেতুকে কাছ থেকে দেখতে চায়। এজন্য ট্রলারের চাহিদা বেড়ে যায়। তাই নসিমন ছেড়ে ট্রলার চালাতে শুরু করি। শীতের আগে অনেক দর্শনার্থী বেড়াতে আসত। শীতের মধ্যে দর্শনার্থী আসা কমে গিয়েছিল। শেষ স্প্যানটি বসার পর থেকে অনেক মানুষ আসতে শুরু করেছে। এখন আয় বেশ ভালো হচ্ছে।

পদ্মা সেতুর সার্ভিস এরিয়ার নিরাপত্তাকর্মী গিয়াসউদ্দিন বলেন, আগে দর্শনার্থী আসা নিষেধ ছিল। শেষ স্প্যান বসানোর পর থেকে এখানে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় শুরু হয়েছে। 

এসপি