দেশে কঠোর লকডাউন থাকলেও প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে করোনার সংক্রমণ। সেই সঙ্গে দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর তালিকা। গেল জুলাই মাসেই ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ৪৮২ জন।

এর মধ্যে করোনায় ১৯১ ও উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ২৯১ জন রোগী। যেখানে পুরুষ ২৭৭ ও নারীর সংখ্যা ২০৫ জন। দৈনিক গড়ে মৃত্যু হয়েছে ১৬ জনের।হাসপাতাল থেকে ১ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত পাওয়া তথ্যমতে, এক মাসে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৮ জন রোগী। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ হাজার ৫৭১ জন।

এদিকে মারা যাওয়া ওইসব ব্যক্তির তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, সর্বোচ্চ ৫৪ শতাংশই ময়মনসিংহ জেলার বাসিন্দা। এ জেলায় করোনা ও উপসর্গে ২৬২ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া জামালপুরের ৪৫ জন, শেরপুরের ৪৩, নেত্রকোনার ৬৫ জন রয়েছেন। বাকি ৬৭ জন টাঙ্গাইল, গাজীপুরসহ বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, করোনায় ও উপসর্গে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের বেশির ভাগের বয়স ৬১ থেকে ৮০ বছর। এ রকম বয়সের সবচেয়ে বেশি ১৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরপর ৪১ থেকে ৬০ বছর বয়সসীমার মধ্যে মারা গেছেন ১৭৯ জন আর ৮১ বছর বা তার বেশি বয়সীদের মৃত্যুর সংখ্যা ৩৪। ২০ বছর বা এর নিচে মারা গেছে ৬ জন।

মমেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. মহিউদ্দিন খান মুন জানিয়েছেন, মারা যাওয়া ব্যক্তিদের অধিকাংশেরই কিডনি, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা ছিল। এর মধ্যে কয়েকজন প্রসূতিও ছিলেন। 

তিনি আরও জানান, করোনা ইউনিটে ২৩০ শয্যার বিপরীতে বর্তমানে ৫২৮ জন ভর্তি রয়েছে। রোগীর চাপ থাকায় অতিরিক্ত রোগীদের মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও আইসিইউ শয্যা আছে ২২টি। আরও ২৪টি আইসিইউ সমমানের শয্যায় হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলার মাধ্যমে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফজলুল কবীর বলেন, অক্সিজেন সংকট মোকাবিলায় করোনা ওয়ার্ডে চিকন পাইপের বদলে বড় ব্যাসার্ধের পাইপ স্থাপন করার মাধ্যমে অক্সিজেন প্রেসার বৃদ্ধি করা হয়েছে। ফলে জটিল রোগীদের অক্সিজেন স্যাচুরেশনের উন্নতি হয়েছে।

উবায়দুল হক/এমএসআর