আটক বেলায়েত খান

দলবল নিয়ে বাড়িতে হামলা চালিয়ে তালাক দেওয়া স্ত্রীকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে মাদারীপুর সদর উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের চরনাচনা গ্রামে। এ ঘটনার ছয় ঘণ্টা পর অপহৃত ওই নারীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার কালিকাপুর থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। 

এ ঘটনায় অপহরণে অংশ নেওয়া বেলায়েত খান (৪৫) নামে এক সহযোগীকে আটক করেছে পুলিশ। তিনি হোসনাবাদ গ্রামের রাজ্জাক খানের ছেলে। 

অপহৃত ওই নারী মাদারীপুর সরকারি সুফিয়া মহিলা কলেজের মানবিক বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। এর আগে একই দিন দুপুর ২টার দিকে সদর উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের চরনাচনা গ্রামের ওই নারী শিক্ষার্থীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায় সাবেক স্বামী বাবু হাওলাদার (২৪)।

পুলিশ, নির্যাতিতার পরিবার ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৯ এপ্রিল সদর উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের হোসনাবাদ গ্রামের ফারুক হাওলাদারের ছেলে বাবু হাওলাদারের সঙ্গে ওই শিক্ষার্থীর বিয়ে হয়। বিয়ের ৮ দিনের মাথায় ওই শিক্ষার্থী বাবুকে তালাক দেন। এরপর থেকে তাকে বিভিন্ন সময় উত্ত্যক্ত করে আসছিল বাবু। এসবের ভয়ে ওই শিক্ষার্থীকে রাজধানীর ঢাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় রেখে আসে তার পরিবার।

দীর্ঘদিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার বাড়িতে আসেন ওই শিক্ষার্থী। এদিন তার বিয়ের জন্য বাড়িতে মেহমান আসবে এমন খবরে সাবেক স্বামী বাবু দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ দলবল নিয়ে হামলা চালায়। এসময় তাদের বাধা দিলে নারীসহ ৩ জনকে পিটিয়ে আহত করা হয়। একপর্যায়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নিয়ে যায় বাবু ও তার সহযোগীরা। এঘটনায় আহতরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।
 
এ ঘটনার খবর পেয়ে অভিযানে নামে পুলিশ। রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার কালিকাপুর থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করে তারা। 

পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সবাই পালিয়ে গেলেও বাবুর সহযোগী বেলায়েত খানকে আটক করে পুলিশ। পরে রাতেই নির্যাতিতার মা বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় বাবুকে প্রধান আসামি করে ১৩ জনের নামে মামলা করেন।

শুক্রবার দুপুরে বেলায়েতকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন মেয়েটির পরিবার ও এলাকাবাসী।

মেয়েটির বড় ভাই বলেন, আমার বোনের সঙ্গে আগে বিয়ে হয়েছিল। পরে আমার বোন বাবুকে তালাক দেয়। কিন্তু বাবু অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এভাবে হামলা চালিয়ে আমার বোনকে অপহরণ করবে বুঝে উঠতে পারিনি। আমি এ ঘটনায় জড়িত সবার বিচার দাবি করছি।

মাদারীপুর মডেল থানা পুলিশের এসআই মো. হাসান জানান, সাবেক স্বামী লোকজন নিয়ে তালাক দেওয়া মেয়েটির বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে অপহরণ করে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। সহযোগী একজন গ্রেফতার হলেও বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।

নাজমুল মোড়ল/এমএএস