সাভারের সালেহপুর সেতুর সংস্কার কাজ চলমান থাকায় বাড়ছে যানজট

সাভারের সালেহপুর সেতুর সংস্কার কাজ চলমান থাকায় বেলা গড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়তে শুরু করেছে গাড়ির সারি। দুপুরে যানজট কম থাকলেও বিকেলে বিভিন্ন পরিবহনের চাপ বাড়তে থাকায় বাড়ছে যানজট। দুর্ভোগে পড়েছেন গাড়ির চালক ও যাত্রীরা।

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের সালেহপুর ব্রিজের ঢাকাগামী লেনের গার্ডারে ফাটল দেখা দেয়াসহ কিছু অংশ দেবে যাওয়ায় ঢাকাগামী লেন দিয়ে যানবাহন বন্ধ করে দিয়ে বুধবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুর থেকে সংস্কার শুরু হয়। ব্রিজটির একটি মাত্র আরিচাগামী লেন দিয়ে ঢাকাগামী ও আরিচাগামী যানবাহনগুলো চলাচল করায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে সাভারের সালেহপুর সেতু সংলগ্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গাবতলী থেকে সাভারের বলিয়ারপুর পর্যন্ত ঢাকাগামী লেনে প্রায় ৮ কিলোমিটারজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে দুপুরে গাড়ির চাপ কম থাকায় যানজট কম ছিল বলে জানিয়েছেন ঢাকা ট্রাফিক পুলিশের অ্যাডমিন আব্দুস সালাম।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানায়, ১৯৭০ সালে নির্মিত হওয়ায় ব্রিজটির স্থায়ীত্বকাল কমে এসেছিল। ১২ জানুয়ারি তারা প্রথমে ব্রিজটির গার্ডারে ফাটল দেখা দেয়ার সংবাদ পান। এরপর দ্রুত তাদের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ১৩ জানুয়ারি থেকে ব্রিজটির ঢাকাগামী লেন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় দুর্ঘটনা রোধে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। পরিস্থিতি নিরসনে সড়ক ও জনপথের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে বলেও জানানো হয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে।

পিকআপভ্যানের চালক মামুন বলেন, 'বলিয়ারপুর থেকে ১ কিলোমিটার আসতে সময় লেগেছে প্রায় দেড় ঘণ্টা। চরম দুর্ভোগে ধুলার মধ্যে বসে আছি। এই দুর্ভোগ আরও প্রায় ২০ দিন পোহাতে হবে বলে শুনেছি। পরবর্তী সময় বিকল্প পথে ফেরার চিন্তা করছি।

পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন মানুষ

হানিফ পরিবহনের চালক সাত্তার বলেন, সামনের একটি সেতুতে ফাটল ধরায় এক লেন বন্ধ করে কাজ করছে বলে শুনলাম। কর্তৃপক্ষ ইচ্ছা করলেই চালকদের ও যাত্রীদের ভোগান্তি থেকে মুক্তি দিতে পারতো। তারা অস্থায়ী একটি সড়ক নির্মাণ করে এই যানজট লাঘব করতে পারতো। কিন্তু তা না করেই সংস্কার কাজ শুরু করেছে।

পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছেন পোশাকশ্রমিক রেশমা। তার সঙ্গে কথা হলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকালে তিন ঘণ্টা পরে অবশেষে পায়ে হেঁটেই অফিসে উপস্থিত হয়েছি। যাওয়ার সময়ও পায়ে হেঁটেই যেতে হচ্ছে। সারাদিন পরিশ্রম করে পায়ে হেঁটে ফেরা অনেক কষ্টের। তাই দ্রুত সংস্কার কাজ শেষ করার দাবি জানান তিনি।

শাহ ফতেহ আলী পরিবহনের যাত্রী তাসলিমা বলেন, ১ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে ১ ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছে। বগুড়া থেকে সারাদিন বাসে বসে আর ভালো লাগছে না। আমরা চরম দুর্ভোগে পড়েছি। দ্রুত সমস্যা সমাধানের অনুরোধ জানান তিনি।

সড়ক ও জনপথে ঢাকা জোনের সহকারী প্রকৌশলী শামীম আল মামুন বলেন, 'যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি ঢাকা জেলা পুলিশও কাজ করছে। আমরা আশা করছি যানবাহনের ধীরগতি থাকলেও যানজটের সৃষ্টি হবে না। তাছাড়া সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করা হবে।

ঢাকা ট্রাফিক পুলিশের অ্যাডমিন আব্দুস সালাম বলেন, সংস্কার কাজ চলমান থাকায় সেতুর গোড়ায় একটু যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বাকি সব সড়ক স্বাভাবিক রয়েছে।

এমএসআর