ধর্ষণের পর প্রেমিকার আত্মহত্যা, প্রেমিকের যাবজ্জীবন
রায়ের পর ধর্ষক সায়েম আলমকে কারাগারে নিয়ে যায় পুলিশ
প্রেমিকাকে ধর্ষণ ও আত্মহত্যায় প্ররোচনার দায়ে এক যুবককে তিন ধারায় কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এর মধ্যে ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
আত্মহত্যায় প্ররোচনার দায়ে তাকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড এবং প্রেমিকার চেইন চুরির দায়ে আরও পাঁচ বছরের কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু আজাদ শামীম আসামির উপস্থিতিতে রোববার (১৩ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম সায়েম আলম মিমু। মামলার অপর আসামি হোটেল ফেয়ার স্টারের ম্যানেজার মজিবর রহমানকে খালাস দিয়েছেন আদালত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর ফয়জুল হক ফয়েজ।
বিজ্ঞাপন
ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী আজিবর রহমান মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে বলেন, নারায়ণগঞ্জের সেলিম আলমের ছেলে সায়েম আলমের সঙ্গে বরিশালের মুসলিম গোরস্থান রোড এলাকার বাসিন্দা সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের ছাত্রী নাঈমা ইব্রাহিম ঐশির ফেসবুকে পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়।
২০১৬ সালের ১০ আগস্ট প্রেমিক সায়েমের ডাকে সাড়া দিয়ে কোচিং সেন্টারে না গিয়ে বরিশাল নগরীর চকবাজার রোডের হোটেল ফেয়ার স্টারে সময় কাটাতে যান ঐশি।
সেখানে নাম পরিবর্তন করে হোটেল রেজিস্ট্রারে মহিমা ইসলাম উল্লেখ করেন ঐশি। পরে হোটেলে ঐশিকে ধর্ষণ করে স্বর্ণের চেইন নিয়ে পালিয়ে যান সায়েম। ধর্ষণের পর হোটেলকক্ষেই আত্মহত্যা করেন ঐশি।
এদিকে কোচিং থেকে বাড়ি না ফেরায় বিভিন্ন স্থানে সন্ধান করেও যখন ঐশিকে পাচ্ছিল না পরিবার; তখন পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারে হোটেল ফেয়ার স্টারে এক ছাত্রীর মরদেহ পাওয়া গেছে। সেখানে গিয়ে মেয়ের মরদেহ শনাক্ত করেন বাবা।
ওই দিনই ঐশির প্রেমিক সায়েম আলম, হোটেল ফেয়ার স্টারের মালিক আব্দুর রব মিয়া, ম্যানেজার মজিবর রহমানকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন ঐশির বাবা।
আট মাস তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ৩১ মার্চ হোটেল মালিক আব্দুর রব মিয়াকে অব্যাহতি দিয়ে এবং সায়েম আলম ও মজিবুর রহমানকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয়া হয়।
মামলার নির্ধারিত কার্যক্রম ও ১৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে সায়েম আলমকে কারাদণ্ড দেন বিচারক। রায় শেষে ধর্ষককে কারাগারে পাঠানো হয়।
এএম