ফরিদপুরের ভাঙ্গায় যাত্রীবাহী বাস উল্টে চারজন নিহত হয়েছেন

ফরিদপুরের ভাঙ্গা-মাওয়া এক্সপ্রেস হাইওয়েতে বাস উল্টে চারজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও ৩০ জন। বুধবার (২০ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে এক্সপ্রেস হাইওয়ের বগাইল টোলপ্লাজা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত চারজনের মধ্যে তিনজন নারী এবং একজন পুরুষ। নিহত পুরুষের পরিচয় পাওয়া গেলেও তিন নারীর পরিচয় এখনও নিশ্চিত করা যায়নি। নিহত ওই পুরুষের নাম আ.রশীদ (৫৫)। তিনি চুয়াডাঙ্গার পেয়ারাতলা এলাকার মো. আলমাসের ছেলে। নিহত একজন নারীর নাম নুরজাহান (৩৫)। তবে তার পূর্ণাঙ্গ পরিচয় পাওয়া যায়নি।

গুরুতর আহত আল-আমিন (১৯), মো. হুসাইন মোল্লা (৩০), মো. জাকির (৩০), রফিকুল ইসলাম (৬), আলেক সর্দার (৭৫), নুরজাহান (৪০), নুরুল আমিন (৪৫), রুপা আক্তার (৭), আব্দুর রহিম (১২), আবু হানিফ (৩২), সেন্টু মাতুব্বর (৩৫), সাব্বির (২০), সজীব মালো (২০), বর্ষাসহ (২০) অন্তত ৩০ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ভাঙ্গা উপজেলা কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। 

ভাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মো. মাহাতাব উদ্দিন বলেন, দুপুর ১২টার দিকে দুর্ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস, হাইওয়ে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা উদ্ধার অভিযান চালায়।

ভাঙ্গা হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওমর ফারুক বলেন, কাঠালবাড়ী ঘাট থেকে ছেড়ে আসা ভাঙ্গাগামী দুরন্ত পরিবহনের একটি বাস (ঢাকা মেট্রো-ব-১১-৩১১৪) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক্সপ্রেস হাইওয়ের বগাইল টোলপ্লাজা এলাকায় উল্টে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হয়। আহত হয় বাসের আরও ৩০ যাত্রী। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরও একজনের মৃত্যু হয়।

তিনি আরও বলেন, বাসের নিচ থেকে দুইজনের ও ভেতর থেকে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আহতদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে। আহতদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

দুর্ঘটনাকবলিত বাস

আহত যাত্রী সালাম জানান, হাইওয়ে এক্সপ্রেসওয়ের আইল্যান্ডের ওপর নির্মাণ শ্রমিকরা কাজ করছিল। বাসের চালক সেন্টু মাতুব্বর বাসকে দ্রুতগতিতে টোলপ্লাজার ভেতরে প্রবেশ করায়। এ সময় আইল্যান্ডের অপর প্রান্তে একটি মাইক্রোবাস দাঁড়ানো ছিল। চালক দুর্ঘটনা এড়াতে অপর আইল্যান্ডের ভেতরে বাসকে প্রবেশ করাতে চেষ্টা করে। এ সময় চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটিকে আইল্যান্ডের ওপর উঠিয়ে দেয়। এতে করে বাসটি মুহূর্তের মধ্যে উল্টে যায়। এ সময় যাত্রীরা বাস থেকে অপরদিকে পরে যায় এবং অনেক যাত্রী বাসের নিচে চাপা পড়ে। স্থানীয় শ্রমিক ও সেনাবাহিনী দ্রুত উদ্ধার অভিযান চালিয়ে অনেক যাত্রীকে উদ্ধার করে।

স্থানীয় বাসিন্দা শাকির হোসেন অভিযোগ করে বলেন, বগাইল টোলপ্লাজার চারপাশে নিয়মবর্হিভূতভাবে এবং ভাঙ্গা চৌরাস্তার ফ্লাইওভারের চারপাশে এবং বরিশাল সড়কের কুমার নদীর ওপর ফোরলেন ব্রিজের ওপর বাস, ইজিবাইক, মাহিন্দ্রা, সোনার বাংলা সহ বিভিন্ন যানবাহন পার্কিং করে রাখা হয়। এতে করে প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোটখাট দুর্ঘটনা। এগুলো অপসারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।

ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মহসিন ফকির জানান, গুরুতর আহত ১৫ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। এদের অনেকের হাত, পা, মাথা থেতলে গেছে। তাদের চিকিৎসা চলছে। আশঙ্কাজনকদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হচ্ছে।

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মেজবাউল খান ফরহাদ বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ১০ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের চিকিৎসা চলছে। তবে ভর্তিকৃত রোগীর মধ্যে একজনের অবস্থা আঙ্শকাজনক।

এসপি