শিমের দামে হতাশ চাষিরা
শিমের ক্ষেত
ভোলার দৌলতখানে এবার শিমের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু শিম বিক্রি করতে গিয়ে হতাশ হয়েছেন চাষিরা। পাইকারি ও খুচরা বাজারে শিমের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন তারা।
জানা গেছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভোলা জেলায় এ বছর ১ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে শিম চাষ হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। এ বছর ক্ষেতে পোকা মাকড়ের আক্রমণ ছিল না। ফলে শিম ক্ষেতগুলো ফলনে পরিপূর্ণ হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এদিকে, শিম তোলার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। অনেককে শিম তুলে বাজারে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে দেখা গেছে। কিন্তু তাদের মুখে হাসি নেই, মলিন তাদের মুখগুলো। বাজারে শিমের দাম কম হওয়ায় লোকসানের মুখ দেখতে হবে বলছেন তারা।
বুধবার (২৭ জানুয়ারি) দৌলতখান উপজেলার উত্তর, জয়নগর, লেজপাতা, চরপাতা, কাজির হাট, মাঝির হাট, চৌধুরী মিয়ার হাটে সরেজমিনে দেখা গেছে, কৃষক শিম তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এখন শিম বিক্রি করতে না পারলে একদিকে যেমন শুকিয়ে যাবে তেমনি লোকসানের মুখে পড়তে হবে।
বিজ্ঞাপন
মাঝির হাটের শিম চাষি আলাউদ্দিন বলেন, এবার শিমের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে শিমের আমদানি অনেক বেশি। তাই পাইকারি ও খুচরা বাজারে শিমের ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে সংশয়ে আছি।
লেজপাতা ইউনিয়নের আবু তালেব চাষি জানান, আমরা লাভের মুখ দেখব না। ভোলা কৃষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে শিমের পাইকারি ও খুচরা মূল্য নির্ধারণ করে দিলে আমরা শিম বিক্রি করে লাভবান হতে পারব।
উত্তর জয়নগর ইউনিয়নের জহিরুল ইসলাম মাছুদ জানান, স্থানীয় জাতের এ সকল শিম কিছুদিন আগে পাইকাররা ক্ষেত থেকে ৪০ টাকা দামে কিনে নিয়ে তা বাজারে বিক্রি করত ৬০ টাকা দরে।আর এখন ১০-১৫ টাকায় আমাদের থেকে নিয়ে বিক্রি করে ২৫-৩০ টাকা। এতে আমরা লোকসানের মুখে পড়ছি।
ভোলা জেলা কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলার সাত উপজেলায় এ বছর শিম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৩০০ হেক্টর। আর চাষ হয়েছে ১ হাজার ৬৫০ হেক্টর। যা লক্ষ্যমাত্রার থেকে ৩৫০ হেক্টর বেশি। তবে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে মূল্য নির্ধারণ করে দিলে শিম বিক্রি করে লাভবান হতে পারবে বলে দাবি চাষিদের।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিনয় কৃষ্ণ দেবনাথ জানান, আমাদের ভোলা জেলায় এ বছর শিম চাষ হয়েছে ১ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে। দৌলতখানে সব থেকে বেশি শিমের চাষ হয়েছে। পোকামাকড়ের আক্রমণও কম হয়েছে। শিম পচনশীল পণ্য হওয়ায় প্রতিদিনের পণ্য প্রতিদিন বিক্রি করতে হয়। ফলন এক সঙ্গে হওয়ায় শিমের বাজার দর কমে গেছে কিছুটা। কৃষকরা যদি শেষ সময় পর্যন্ত ভালো দাম পায় তাহলে আশা করা যাচ্ছে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন।
রাকিব উদ্দিন অমি/এসপি