চাকরিজীবী-বিবাহিত-ছাত্রলীগ কর্মীদের দিয়ে ছাত্রদলের কমিটি!
বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়কের বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ছাত্রদল নেতা ইলিয়াস হোসেন
ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে চাকরিজীবী, বিবাহিত ও ছাত্রলীগ কর্মীদের দিয়ে সরকারি ব্রজমোহন কলেজ (বিএম) ছাত্রদলের কমিটি গঠনের প্রতিবাদ জানিয়েছে স্থানীয় নেতারা।
সোমবার (০১ ফেব্রুয়ারি) আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষিত কমিটি বাতিল করে পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছেন ছাত্রদলের নেতারা। এ নিয়ে দুপুরে বরিশালের বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়কের বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেন ছাত্রদল নেতা ইলিয়াস হোসেন।
বিজ্ঞাপন
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল নেতা ইলিয়াস হোসেন বলেন, অনুমোদন পাওয়া কমিটিতে ৪ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী শফিউল বাশার আইএফআইসি ব্যাংকের বরিশাল করপোরেট শাখায় কর্মরত, ৬ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক ফেরদৌস আহমেদ বিবাহিত এবং সরকারি চাকরিজীবী। তার স্ত্রীর নাম মিম। শ্বশুর মোসলেম উদ্দিন হাওলাদার। সরকারি ব্রজমোহন কলেজ ছাত্রদলের ৯ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক রকিব হাওলাদার সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজে অনার্সের শিক্ষার্থী। বিএম কলেজ ছাত্রদলের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা নেই। ১২ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক শাহারিয়া জামান মিঠুন বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী। তিনি বিএম কলেজের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। ১৬ নম্বর সদস্য রেজাউল করিম রেজা বিএম কলেজ ছাত্রদলের অপরিচিত মুখ। বিএম কলেজ ছাত্রদলের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা নেই।
ইলিয়াস হোসেন বলেন, ১/১১ থেকে ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে ব্রজমোন কলেজে যারা জড়িত ছিলেন, তারপর যারা জড়িত হয়ে আওয়ামীবিরোধী আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তুলেছেন তাদের কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়নি।
বিজ্ঞাপন
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, কমিটিতে যাকে আহ্বায়ক করা হয়েছে, সেই মাজাহারুল ইসলাম বাবু একজন বিতর্কিত নেতা। তিনি সরকারদলীয় নেতাদের সঙ্গে আঁতাত করে রাজনীতি করেন। ২০১৪ সাল থেকে তিনি ঢাকায় কর্মরত। মাজাহারুল ইসলাম বাবু বাকেরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক প্রার্থী ছিলেন। তিনি মূলত জেলা ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকে ম্যানেজ করে আহ্বায়ক হয়েছেন। পাশাপাশি কমিটির সদস্য সচিব সজল তালুকদার বিএম কলেজ ছাত্রদলের নেতা নন; তিনি বরিশাল সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী। এ অবস্থায় বিতর্কিত কমিটি বাতিল করে ত্যাগী ছাত্রদলের কর্মীদের দিয়ে কমিটি গঠনের আহ্বান জানাই।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ঘোষিত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক খালিদ হোসেন বাবর, ছাত্রদল নেতা এসএম শামীম রেজা শুভ, আশিকুল ইসলাম শাহিনম ও আরিফুর রহমান।
সরকারি ব্রজমোহন কলেজ ছাত্রদলের কমিটি গঠনের বিষয়ে বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রেজাউল করিম রনি বলেন, কমিটি গঠনের পর যারা কাঙ্ক্ষিত পদ-পদবী পাননি তারা ক্ষোভে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। মূলত নিজে বড় পদ পেতে অনুমোদিত কমিটি বিতর্কিত করতে চান।
একের পর এক কমিটির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে রেজাউল করিম রনি বলেন, যারা করছেন তারা সংগঠনের চেয়ে ব্যক্তির সুবিধা বড় করে পেতে চান। কমিটি গঠনের জন্য আমরা সুপারিশ করেছি মাত্র। তারপরও নেতাকর্মীদের দক্ষতা ও কর্মতৎপরতা বিবেচনা করে ৭ জানুয়ারি কমিটির অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। কাজেই আমাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে তা না বুঝেই করছেন তারা।
এর আগে ৭ জানুয়ারি ১০ উপজেলা, ছয় পৌরসভা এবং ১৫ কলেজে ছাত্রদলের ৩১ কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্র। প্রায় ১৮ বছর পর বরিশাল জেলা ও মহানগরে এসব কমিটি গঠিত হয়।
রোববার (৩১ জানুয়ারি) বরিশাল পলিটেকনিক কলেজের কমিটি বাতিলের দাবি জানানো হয়। তার আগে আগৈলঝাড়া, বাকেরগঞ্জ, বানারীপাড়া ও হিজলা উপজেলা ছাত্রদলের কমিটি বাতিলের দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/এএম