শ্রীমঙ্গল উপজেলা থেকে বিষাক্ত লাল-গলা ঢোঁড়া সাপ উদ্ধার

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলা থেকে একটি বিষাক্ত লাল-গলা ঢোঁড়া সাপ উদ্ধার করেছে বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন। সোমবার (০১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক সজল দেব এটি উদ্ধার করে নিয়ে আসেন সেবাশ্রমে। সাপটি লম্বায় তিন ফুটের মতো।

বন্যপ্রাণী ফাউন্ডেশনের পরিচালক সজল দেব বলেন, একটি সাপ হঠাৎ দেখে লোকজন আতঙ্কিত হয়ে আমাকে ফোন দেন। আমি শ্রীমঙ্গল শহরের কলাবাজারে গিয়ে এটিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি। কলার ছড়ার ভেতরে করে সাপটি প্রাকৃতিক বন থেকে এখানে আসতে পারে।  

সাপটির ইংরেজি নাম রেড-নেক কিলবেক (Red-necked Keelback)। লাল-ঘাড় ঢোঁড়া সাপ ছাড়াও বাংলায় একে লাল-ঢোঁড়া সাপ বলে। এরা দিবাচর অর্থাৎ দিনের বেলায় বিচরণ করে। উত্তেজিত হলে গোখরা সাপের মতো মাথা উঁচু করে ফনা তুলতে পারে। এরা বিষধর এবং তাদের কামড়ে তীব্র বিষ লক্ষ্য করা যায়। চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের মিশ্র চিরসবুজ বনের পরিত্যক্ত জলাশয়, আর্দ্র তৃণভূমি প্রভৃতিতে এদের পাওয়া যায়। এরা বিপন্ন প্রজাতি। লাউয়াছড়া বনে সাপটি অবমুক্ত করা হবে।

সজল দেব, পরিচালক, বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন

বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা যায়, সরীসৃপ জাতীয় প্রাণী সাপ বন্যপ্রাণীদের মধ্যে অতিপরিচিত। মানুষের সঙ্গে খুব কাছাকাছি অবস্থান হওয়ায় সাপটিকে নিয়ে প্রচলিত রয়েছে ভীতি আর কুসংস্কার। এছাড়া রয়েছে রূপকথার গল্প। সাপের সঙ্গে মানুষের সংঘর্ষ হয় প্রচুর। অজ্ঞতা ও অসাবধানতার জন্য প্রতি বছর সাপের কামড়ে মারা যায় অনেক মানুষ। ঠিক তেমনি মানুষের হাতে মরে যাচ্ছে অনেক সাপ, হোক তা নির্বিষ অথবা বিষধর। তেমনি এক রহস্যময় সাপ লাল-গলা ঢোঁড়া সাপ। যা বাংলাদেশে তথা পৃথিবীতে সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছে। মাঝারি আকৃতির সাপটির শরীরের ওপরের অংশ জলপাই বাদামি অথবা সবুজ রঙের এবং হলুদ ও কালো রঙের জালিকা আকারের ছোপ পুরো শরীরে বিদ্যমান। ঘাড় সিঁদুর রঙের। চোখের নিচে কালো দাগ বিদ্যমান। শরীরের নিচের অংশ হলদে।

লালঘাড় ঢোঁড়া সাপ দিবাচর। সাধারণত বন-জঙ্গল, তৃণভূমি, ধানক্ষেত, পুকুর ও ডোবায় এর দেখা মেলে। ব্যাঙ, টিকটিকি ও ছোট স্তন্যপায়ী এর প্রধান খাবার। জুন-জুলাই মাস এদের প্রজননকাল। স্ত্রী সাপ ৫-১৭টি ডিম পাড়ে। স্ত্রী সাপ পুরুষ থেকে আকারে কিছুটা বড়। 

ওমর ফারুক নাঈম/এএম