মাদারীপুরে ইতালিপ্রবাসী এক কিশোরীকে অস্ত্রের মুখে মাইক্রোবাসে করে অপহরণ করা হয়েছে। ঘটনার তিন দিন অতিবাহিত হলেও এখনো সন্ধান মেলেনি ওই কিশোরীর। পরিবারের লোকজন থানায় অভিযোগ দিলে এ ঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 

বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল ইসলাম মিঞা জানান, তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ওই কিশোরীকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

ভুক্তভোগী পরিবার এবং অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, আত্মীয় মারা যাওয়ার খবর পেয়ে ৮ বছর পর মা-বাবার সঙ্গে ইতালি থেকে মাদারীপুর পৌর শহরের ২ নং শকুনি এলাকায় ফুপার বাড়িতে বেড়াতে আসে ১৫ বছর বয়সী কিশোরী নোভা। গত ১০ জানুয়ারি সকাল ৯টার দিকে ঘুম থেকে উঠে দাঁত ব্রাশ করতে করতে বাড়ির সামনের সড়কে যায় নোভা। সেখানে যাওয়া মাত্রই তাকে মাইক্রোবাসে তোলার চেষ্টা করে অপহরণকারীরা। এ সময় নোভা চিৎকার করলে লোকজন আসার আগেই দেশীয় অস্ত্রের মুখে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায় আফজাল হোসেন শাওনসহ তার সহযোগীরা। এ ঘটনার পর থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো সন্ধান মেলেনি নোভার। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পাশাপাশি মেয়েটিকে দ্রুত উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।

ঘটনার পরদিন অপহৃত কিশোরীর বাবা রিপন চোকদার বাদী হয়ে আফজাল হোসেন শাওন (১৫) ও তার বাবা সৈয়দ হাওলাদারসহ তিনজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও চারজনের নামে সদর মডেল থানায় মামলা করেন। মামলার পর দুজন আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হলেও আফজাল এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। 

মামলায় অভিযুক্ত বাকি আসামিরা হলেন- সৈয়দ হাওলাদারের ছেলে নাজমুল হাসান, জফর উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে আলহাক হাওলাদার এবং সৈয়দ হাওলাদারের স্ত্রী নারগিস বেগম। অভিযুক্ত সবাই মাদারীপুর সদর উপজেলার কুলপদ্দি তালতলা এলাকার বাসিন্দা।

কিশোরীর বাবা রিপন চোকদার বলেন, আমার মেয়ে এখনো বাংলায় ঠিকমতো কথা বলতে পারে না। দেশের টাকাও চেনে না। তাকে কৌশলে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। এই ঘটনার বিচার চাই। আমার মেয়েকে দ্রুত ফেরত চাই।

কিশোরীর ফুফা সামসুদ্দিন মাতুব্বর বলেন, নোভা ব্রাশ করতে বাড়ির সামনের সড়কে আসলে কতিপয় সন্ত্রাসী তাকে মাইক্রোবাসে করে  অপহরণ করে। তাকে উদ্ধারের জন্য প্রশাসনের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি।

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল ইসলাম মিঞা জানান, এ ঘটনায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরও চারজনের নামে সদর মডেল থানায় মামলা করেছেন মেয়েটির বাবা। ইতোমধ্যে দুইজনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তবে প্রধান অভিযুক্ত আফজাল হোসেন শাওন এখনো পলাতক রয়েছে। তাকে ধরতে ও কিশোরীকে উদ্ধার করতে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

নাজমুল মোড়ল/আরআই