পেঁয়াজ উৎপাদনে বিশ্বে বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। যা আগে ছিল দশম। দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ৩৫ থেকে ৩৬ লাখ মেট্রিক টন। সেখানে গত বছর দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ৩২ লাখ মেট্রিক টন। গত এক বছরে দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৮ লাখ মেট্রিক টন।

বারির মসলা গবেষণা কেন্দ্র এখন পর্যন্ত বিভিন্ন ফসলের ৪৭টি জাত উদ্ভাবন করেছে। যার মধ্যে পেঁয়াজের জাত ছয়টি। প্রতি বছর দেশে প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। যা মোট মসলা আমদানির অর্ধেক। 

বুধবার (২৬ জানুয়ারি) বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) আঞ্চলিক মসলা গবেষণা কেন্দ্রের গবেষণা মাঠে সারাবছর চাষ উপযোগী বারি পেঁয়াজ-৫ এর উৎপাদন কলাকৌশল শীর্ষক মাঠ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিজ্ঞানীরা এসব তথ্য জানান। 

বিজ্ঞানীরা বলেন, আমরা যদি পেঁয়াজের নতুন জাতগুলো সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করে চাষাবাদ করি তাহলে পেঁয়াজ উৎপাদনে খুব শিগগিরই আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পারব।

সকালে মাঠ দিবসের উদ্বোধন করেন বারির মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার। বারির আঞ্চলিক মসলা গবেষণা কেন্দ্রের গাজীপুরের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হরিদাস চন্দ্র মোহন্তের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বারির পরিচালক (সেবা ও সরবরাহ) ড. মো. কামরুল হাসান ও পরিচালক (গবেষণা) ড. মো. তারিকুল ইসলাম। 

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বারির মসলা গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও প্রকল্প পরিচালক ড. শৈলেন্দ্র নাথ মজুমদার, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নিবেদিতা নাথ প্রমুখ। 

বারির মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার বলেন, বারি পেঁয়াজ-৫ আগাম ও নাবি খরিপ মৌসুমে আবাদ উপযোগী স্বল্পমেয়াদি গ্রীষ্মকালীন বা সারা বছর চাষের উপযোগী উচ্চ ফলনশীল জাত। প্রতিটি গাছের উচ্চতা ৫০-৫৫ সেন্টিমিটার এবং প্রতিটি গাছে ১০ থেকে ১২টি পাতা হয়। কন্দ গোলাকার এবং লালচে বর্ণের। প্রতিটি কন্দের গড় ওজন প্রায় ৯০-১০০ গ্রাম হয়ে থাকে। বাংলাদেশে পেঁয়াজের জাতীয় গড় ফলন হেক্টর প্রতি ১০ দশমিক ৫৬ টন হলেও বারি পেঁয়াজ-৫ এর হেক্টর প্রতি ফলন ১৬-২২ টন। গ্রীষ্মকালীন বারি পেঁয়াজ-৫ আগাম মার্চ থেকে জুন এবং নাবি আগস্ট থেকে অক্টোবর মাসে চাষ করা যায়। 

বাংলাদেশে মসলা জাতীয় ফসলের গবেষণা জোরদারকরণ প্রকল্পের অর্থায়নে আয়োজিত এ মাঠ দিবসে ১০০ জন কৃষক অংশগ্রহণ করেন।

শিহাব খান/আরএআর