আহত মুন্নি

প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মুন্নি (১৮) নামের এক কলেজছাত্রী অ্যাসিড নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ইনজেকশনের সিরিঞ্জ দিয়ে তাকে অ্যাসিড ছুড়ে মুখমণ্ডলের কিছু অংশ ঝলসে দেয় বখাটেরা। বৃহস্পতিবার (৪ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টায় আবদুল্লাহপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুল খালেক সিকদারের বাড়িতে এমন পাশবিক ঘটনাটি ঘটছে।

বিচার চেয়ে শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) চরফ্যাশন থানায় অ্যাসিড মামলা করেছেন মুন্নির বাবা আবদুল্লাহপুর ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুল খালেক সিকদার। মামলায় একই এলাকার হানিফ ও তোতা নামের দুজনকে আসামি করা হয়েছে।

অ্যাসিডে আহত মুন্নি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি রাত আটটায় মোবাইলে ফেসবুক চালাচ্ছিলাম। তখন আমার রুমের জানালার কাছে কারা যেন কানাঘুষা করছিল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার মুখের ডান পাশে অ্যাসিড মারে। আমি অন্ধকারে হানিফ ও তোতাকে দৌড়ে পালাতে দেখি। আমার চিৎকারে ঘরে থাকা মা ও ভাবি এসে আমার মুখে পানি ঢালেন। পরে আমাকে চরফ্যাশন হাসপাতালে নিয়ে আসে।

মুন্নি জানান, এ ছাড়া গত সপ্তাহে দুদিনে আমার বাসা থেকে দুটি ওড়না নিয়ে গেছে হানিফ ও তোতা। আমাকে প্রায়ই চলার পথে উত্ত্যক্ত করে তারা। আমি আমার মাকে বিষয়টি জানিয়েছি।

এ ব্যাপারে আহত মুন্নির মা ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাতে হঠাৎ আমি আর ছেলের বউ মুন্নির চিৎকার শুনে দৌড়ে যাই। মেয়ের কান্না শুনে দিশা না পেয়ে কাছে গিয়ে মুখে পানি ঢালি মেয়েকে ঠান্ডা করার চেষ্টা করি। পরে মেয়েটির বাবা ও ভাইকে ফোন করে বাড়িতে ডেকে এনে মেয়েকে চরফ্যাশন হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি। এই বর্বরতার বিচার চাই।

আমার কলেজপড়ুয়া মেয়ের ওপরে খালেক মাঝির ছেলে হানিফ ও ছালাউদ্দিনের ছেলে তোতা মিলে ইনজেকশনের সিরিঞ্জ দিয়ে অ্যাসিড ছুড়েছে। আমি তাদের বিচার চাই।

আবদুল খালেক সিকদার, মুন্নির বাবা

এ বিষয়ে বাল্যবিয়ে ও শিশু নির্যাতন কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহাদাত শাহিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বর্তমানে অ্যাসিড নিক্ষেপের ঘটনা বিরল। কারণ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অ্যাসিড নিক্ষেপের ওপরে কঠিন আইন করে অ্যাসিড নিক্ষেপ বন্ধ করেন। এই ন্যক্কারজনক ঘটনার কঠিন বিচার হওয়া উচিত।

এ ছাড়া নারীনেত্রী অধ্যক্ষ সাফিয়া খাতুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রাচীন যুগ থেকেই নারীরা নির্যাতিত হয়ে আসছেন। এখন সময় এই বর্বরোচিত কর্মকাণ্ডগুলোর বিপক্ষে রুখে দাঁড়ানো।

চরফ্যাশন থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন মিয়া বলেন, খবর পেয়ে রাতেই আমি হাসপাতালে অ্যাসিডদগ্ধ মেয়েটিকে দেখতে গিয়েছি। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

রাকিব উদ্দিন অমি/এনএ