প্রতি মাসে ১০১ ভ্যাটদাতা পাবেন পুরস্কার, চূড়ান্ত নীতিমালা
সংগৃহীত ছবি
প্রতি মাসে লটারির মাধ্যমে সারাদেশ থেকে ১০১ জন ভ্যাটদাতাকে পুরস্কার দেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। লটারিতে একজন ভ্যাটদাতা সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা পুরস্কার পাবেন। কী প্রক্রিয়ায় বিজয়ী নির্বাচন করা হবে সে বিষয়ে নীতিমালা চূড়ান্ত করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, যেসব ক্রেতা পণ্য কিনে ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) মেশিনের চালান নেবেন তাদের মধ্য থেকে ১০১ জন পাবেন এ পুরস্কার। ভ্যাটদাতাদের ইএফডি রসিদ নেয়ায় উৎসাহিত করতেই নেয়া হয়েছে এই উদ্যোগ।
বিজ্ঞাপন
লটারি হবে কীভাবে?
পুরস্কার প্রদান পদ্ধতির বিষয়ে নীতিমালায় বলা হয়েছে, ইএফডি থেকে ইস্যু করা চালানকে লটারির কুপন হিসেবে ধরা হবে। যে মাসে লটারির ড্র অনুষ্ঠিত হবে তার আগের মাসের প্রথম দিন থেকে শেষ দিন পর্যন্ত ইস্যু করা ভ্যাট চালানগুলোকে লটারির কুপন হিসেবে নির্বাচন করা হবে। এনবিআরের ভ্যাট বিভাগ প্রতি মাসে এই লটারির আয়োজন করবে।
বিজ্ঞাপন
নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, প্রতি ইংরেজি মাসের ৫ তারিখে লটারির ড্র অনুষ্ঠিত হবে। ওই দিন সরকারি ছুটি থাকলে পরবর্তী কার্যদিবসে ড্র হবে। লটারির ড্র অনুষ্ঠানের তিন কার্যদিবসের মধ্যে বিজয়ীদের কুপন নম্বর প্রচারমাধ্যমে প্রকাশ করা হবে। তারপর বিজয়ীদের ওই মাসের শেষ কার্যদিবসের মধ্যে পুরস্কারের জন্য আবেদন করতে হবে। এরপর কুপন নম্বর মিলিয়ে দেখাসহ প্রয়োজনীয় তথ্য যাচাই–বাছাই করা হবে। আবেদনপত্রে আবেদনকারীর নাম, সই, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), চালান নম্বর, ইস্যুর তারিখ থাকতে হবে।
এনবিআরের মূসক বাস্তবায়ন বিষয়ক সদস্যকে আহ্বায়ক করে ৬ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি থাকবে। কমিটি লটারির ড্র অনুষ্ঠান পর্যবেক্ষণ করবে। কমিটি সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বেও থাকবে। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন- এনবিআরের সিস্টেম ম্যানেজার, আইআরডি, অর্থবিভাগ ও কমিশনারেট থেকে মনোনীত একজন প্রতিনিধি এবং মূসকের তথ্য প্রযুক্তি ও প্রকল্প ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় সচিব।
এনবিআর থেকে প্রথম তিনটি পুরস্কার দেয়া হবে। চতুর্থ পুরস্কার দেবে ক্রেতা যে কমিশনারেট বা বিভাগ বা সার্কেলে আবেদন করবেন সে দপ্তর। পুরস্কারের টাকা চেকের মাধ্যমে দেয়া হবে।
গত ৬ ডিসেম্বর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সই করা লটারি বিজয়ী নির্বাচনের নীতিমালা সংক্রান্ত আদেশ ইস্যু করা হয়।
পুরস্কার কত টাকা?
প্রথম পুরস্কার বিজয়ী পাবেন ১ লাখ টাকা। দ্বিতীয় পুরস্কার ৫০ হাজার, তৃতীয় পুরস্কার ২৫ হাজার টাকা। ৯৪ জন পাবেন ১০ হাজার টাকা করে। প্রতি মাসে লটারি বিজয়ীদের জন্য মোট ১২ লাখ ১৫ হাজার টাকা খরচ হবে। এনবিআরের কেন্দ্রীয় অনলাইন সিস্টেমের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে লটারির আয়োজন করা হবে।
ইএফডি মেশিন বা ভ্যাটের মেশিন আছে, এমন দোকান থেকে পণ্য বা সেবা কিনলেই শুধু লটারির জন্য বিবেচনা করা হবে। পাকা রসিদ হতে হবে, কাঁচা বা জাল রসিদ হলে হবে না। ভ্যাট মেশিন স্বয়ংক্রিয়ভাবে যে রসিদ দেবে, সেই রসিদের নম্বর ধরেই লটারি হবে।
২০১৯ সালের জুন মাসে নতুন ভ্যাট আইন চালু হয়। এ আইনের আওতায় এনবিআর স্বয়ংক্রিয় ও অনলাইনভিত্তিক কর ব্যবস্থা প্রবর্তনের নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বর্তমানে দেশের সব সিটি করপোরেশন ও জেলা শহরে অবস্থিত বিভিন্ন পণ্য ও সেবা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানে ইএফডি মেশিন বসানো বাধ্যতামূলক।
এরইমধ্যে এনবিআর পরীক্ষামূলকভাবে ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ইএফডি মেশিন বসানো শুরু করেছে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে পণ্য ও সেবা কিনলে ওই মেশিন থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ‘মূসক ৬.৩’ চালান ইস্যু করতে হবে। প্রথম পর্যায়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামে এক হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইএফডি মেশিন বসানো হয়েছে। আগামী জুনের মধ্যে আরও ১০ হাজার ইএফডি মেশিন বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে এনবিআরের।
মূলত হোটেল, রেস্তোরাঁ, ডিপার্টমেন্টাল স্টোরসহ সেবা খাতের লেনদেনের তথ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে ভ্যাটের হালনাগাদ তথ্য পেতে ইএফডি মেশিন বসানো হচ্ছে। ২৫ সেবা খাতে ইএফডি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত হয়।
আরএম/এইচকে