আব্দুল খালেক খান

ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের (আইএলএফএসএল) এমডি আব্দুল খালেক খান পদত্যাগ করেছেন।

বুধবার (২০ জানুয়ারি) পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে আব্দুল খালেক পদত্যাগপত্র জমা দি‌য়ে‌ছেন বলে ঢাকা পোস্টকে ‌বিষ‌য়টি নি‌শ্চিত ক‌রে‌ছেন।

এর আ‌গে গত বছরের ১৪ জুন প্রতিষ্ঠানটির এমডি হিসেবে নিয়োগ পান আব্দুল খালেক। ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের দা‌য়িত্ব নেওয়ার আগে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক ও বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের এমডি ছিলেন। তার আগে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ডিএমডি ছিলেন।

এ‌দি‌কে শনির দশা ছাড়ছে না ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের। জালিয়াতি আর লুটপাট করে হাজার কোটি টাকা আত্মসাত করেছে আলোচিত প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার।

পি কে হালদার যে চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ আত্মসাত করে পালিয়েছেন তার একটি ইন্টারন্যাশনাল লিজিং। প্রতিষ্ঠানটি থেকে পি কে হালদার বিভিন্ন উপায়ে ঋণের নামে এক হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা বের করে নেন বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক তদন্তে উঠে আসে।

আদালতের নির্দেশে আইএলএফএসএলের বর্তমানে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সাবেক সচিব নজরুল ইসলাম খান।

এদিকে অনিয়ম আর নানা জালিয়াতির কারণে দীঘদিন ধরে খারাপ অবস্থায় পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল লিজিং। আমানতকারীদের জমানো টাকা ফেরত দিতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি। এসব কারণে গত বছরের ২১ জানুয়া‌রি  ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের স্বাধীন পরিচালক ও চেয়ারম্যান হিসেবে ইব্রাহিম খালেদকে নিয়োগ দেন হাইকোর্ট। কিন্তু তিন মাস না যেতেই পদত্যাগ করেন তিনি।

ইব্রাহিম খালেদ বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব নিয়েছিলাম। প্রতিষ্ঠানটির বিতরণকৃত ঋণের অর্ধেকই ফেরত আসার সম্ভাবনা নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুসন্ধানেই এ অর্থের কোনও হদিস পাওয়া যায়নি। এ ধরনের একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে টেনে তোলা সম্ভব নয়।

তি‌নি বলেন, কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ খারাপ হলে সেটি সংস্কার করা যায়। অনিয়মের মাধ্যমে বিতরণকৃত ঋণ আদায়ের চেষ্টা করেও সফল হওয়া সম্ভব। কিন্তু যে প্রক্রিয়ায় ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকে টাকা লুণ্ঠন করা হয়েছে, সে টাকা ফেরত আসার কোনও সম্ভাবনা দেখছি না। এ টাকা আদায় করার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) উদ্যোগী হতে পারে।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে–পরে মিলিয়ে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ও বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানির (বিআইএফসি) শেয়ার নামে–বেনামে কিনে প্রতিষ্ঠানগুলো দখলে নেন পি কে হালদার। এ চার প্রতিষ্ঠানের একটি এখন বিলুপ্তির পথে, বাকি তিনটিও গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে পারছে না। পি কে হালদারও পলাতক। আর আমানতকারীরা দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন টাকা ফেরত পাওয়ার আশায়। 

এসআই/ওএফ