এক মাসের বেশি কাঁচা পাট মজুত করা যাবে না : পাটমন্ত্রী

কাঁচা পাটের ডিলার বা আড়ৎদাররা এক হাজার মণের বেশি পাট এক মাসের বেশিসময় ধরে মজুত করতে পারবে না বলে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। 

অভ্যন্তরীণ বাজারে প্রয়োজনীয় কাঁচাপাট সরবরাহ নিশ্চিত করতে এবং পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানির ধারা বেগবান করার লক্ষ্যে পাট অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী।

বুধবার (২০ জানুয়ারি) সচিবালয়ে বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিজেএমএ) ও বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। 

দেশে কাঁচা পাটের সংকট তৈরির কারণে মিলগুলো উৎপাদন ঝুঁকিতে পড়েছে উল্লেখ করে পাটমন্ত্রী বলেন, এ অবস্থায় পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি আয়ের ধারা অব্যাহত রাখাতে কাঁচা পাটের সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এজন্য লাইসেন্সবিহীন অসাধু ব্যবসায়ীদের কাঁচা পাট ক্রয়-বিক্রয় ও মজুত থেকে বিরত রাখা; ভেজা পাট ক্রয়-বিক্রয় রোধ করার জন্য পাট অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 
 
তিনি বলেন, চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী পাট চাষ নিশ্চিত ও বীজ সরবরাহ সঠিক রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মানসম্মত পাটবীজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে পাঁচবছরের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় যৌথ উদ্যোগে একটি রোডম্যাপ তৈরি করা হয়েছে। 

সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত পাটবীজ উৎপাদনে স্বনির্ভর হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রয়োজনীয় পাটবীজ সংগ্রহে আমদানি নির্ভরতা আর থাকবে না। এ পাট মৌসুম থেকে রোডম্যাপ বাস্তবায়ন শুরু হবে। 

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় ‘উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্প চলমান রয়েছে। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় উচ্চফলনশীল পাট বীজ উৎপাদনে স্বয়ম্ভরতার অর্জন এবং মানসম্মত পাট উৎপাদনে কৃষকদের উদ্ধুদ্ধকরণ ও সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে এ প্রকল্প চলমান রয়েছে। 

প্রকল্পটি দেশের ৪৬টি জেলার ২৩০টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় প্রতিবছর প্রত্যক্ষভাবে এক লাখ ৫৩ হাজার পাটচাষি এবং পরোক্ষভাবে ৬ লাখ ১২ হাজার কৃষক ও পরিবারের সদস্য উপকৃত হচ্ছে।

চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ৬৬৮ দশমিক ১১ কোটি ডলার আয় করেছে। এই অংক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩০ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি। আর তা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ১৯ দশমিক ২৯ শতাংশ বেশি।

এ সময় বস্ত্র ও পাট  মন্ত্রণালয়ের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সাবিনা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ জুট মিলস্ অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান পাটোয়ারী, বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান জাহিদ মিয়াসহ অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এসএইচআর/এসএম