বাংলাদেশ ব্যাংকের সংগৃহীত ছবি

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে অর্থনৈতিক ক্ষতি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প এবং মাঝারি শিল্পখাতের (সিএমএসএমই) জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ বিতরণের সময় তিন মাস বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সময় বাড়ানোর কারণে এখন ৩১ মার্চ পর্যন্ত এই তহবিল থেকে ঋণ পাবেন ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তারা। 

এর আগে এই ঋণের জন্য আবেদন করতে প্রথম দফায় আগস্ট এবং পরে তা দুই মাস বাড়িয়ে ৩১ অক্টোবর, এরপর ৩০ নভেম্বর ও সবশেষ ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়িয়ে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। 

রোববার (৩ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস ডিপার্টমেন্ট ঋণ বিতরণের সময় বাড়িয়ে একটি সার্কুলার জারি করেছে।

এতে বলা হয়েছে, নভেল করোনাভাইরাস এর প্রাদুর্ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগগুলোর জন্য প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০ (বিশ) হাজার কোটি টাকার প্যাকেজের ঋণ/বিনিয়োগ বিতরণ লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের সময়সীমা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারিত হয়। প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, কিছু ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান আলোচ্য প্যাকেজের আওতায় তাদের জন্য নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হলেও কিছু কিছু ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান তা অর্জন করতে পারেনি।

আলোচ্য প্যাকেজের আওতায় সব ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অর্জন নিশ্চিত করতে প্যাকেজের আওতায় ঋণবিতরণ লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের সময়সীমা আগামী ৩১ মার্চ পুনর্নির্ধারণ করা হলো।

যেসব প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়ে প্যাকেজের ঋণ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি, তাদের ৩১ মার্চ এর মধ্যে তা নিশ্চিত করতে একটি মাসভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করে ১৭ জানুয়ারির মধ্যে ওই বিভাগে পাঠাতে হবে।

ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩ এর ১৮ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করা হয়েছে বলে সার্কুলারে উল্লেখ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে অর্থনৈতিক ক্ষতি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প এবং মাঝারি শিল্পখাতের (সিএমএসএমই) জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। শুরু থেকেই বিভিন্ন অজুহাতে ছোট উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের ঋণ দিতে অনীহা দেখায় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। ঋণ বিতরণ বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক চাপ, সতর্কতা, ঋণ নিশ্চয়তা স্কিম (ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম) গঠনসহ বিভিন্ন উদ্যোগও নেওয়া হয়। ঋণ দেওয়ার বিভিন্ন শর্তও শিথিল করে। কিন্তু তারপরও এখন পর্যন্ত এ তহবিল থেকে বিতরণ তেমন গতি আসেনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, সবশেষ তথ্যানুযায়ী, এ পর্যন্ত সিএমএসএমইখাতের ২০ হাজার কোটি টাকার তহবিলের মধ্যে ১১ হাজার কোটি টাকার মতো ঋণ বিতরণ হয়েছে। ঋণ শতভাগ বিতরণের জন্য ৩ মাস সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। শুরুতে ঋণ কম দিলেও এখন গতি বেড়েছে। এবার নির্ধারিত সময়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ বাস্তবায়ন করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত সিএমএসএমইখাতের প্যাকেজের ঋণ বিতরণ হয়েছে ৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। আর অনুমোদন ১১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা।

 

এসআই/জেডএস