জেড আকৃতিতে ৪১ ও ৪২তম বিসিএসের পরীক্ষার আসন বিন্যাস

স্বাস্থ্যবিধি মেনে আসন্ন ৪১ ও ৪২তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকারি কর্ম কমিশন। এক্ষেত্রে এক বেঞ্চে একজন পরীক্ষার্থী বসবেন। আসন বিন্যাস হবে ইংরেজি অক্ষর জেড ‘Z’ আকৃতির মতো।

অর্থাৎ সামনের বেঞ্চে পরীক্ষার্থী বাম পাশে বসলে পেছনের বেঞ্চে ডান পাশে বসবেন। একইভাবে পরের বেঞ্চে আসন বিন্যাস হবে। এছাড়া শিক্ষার্থী ও হল পরিদর্শককে অবশ্যই মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা মেনে পরীক্ষা হলে প্রবেশ করতে হবে।

আগামী ১৯ মার্চ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি যথাক্রমে ৪১ ও ৪২তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে চিকিৎসকদের জন্য ৪২তম বিশেষ বিসিএসের ৩১ হাজারের বেশি আবেদন পড়েছে। এ পরীক্ষাটি শুধু রাজধানীর বিভিন্ন কেন্দ্র অনুষ্ঠিত হবে। এ পরীক্ষা আসন বিন্যাস ও কেন্দ্র আগামী সপ্তাহ প্রকাশ করবে পিএসসি।

অন্যদিকে, ৪১তম সাধারণ বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার অনুষ্ঠিত হবে এ বছরের ১৯ মার্চ। এ বিসিএসে রেকর্ড সংখ্যক চার লাখ ৭৫ হাজার জন আবেদন করেছেন। এ বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ কেন্দ্রে একযোগে হবে।

দুটি বিসিএস পরীক্ষা নেওয়ার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসন নির্ধারণ ও হল পরিদর্শকের দায়িত্ব পালন করতে পিএসসি চিঠি দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। পিএসসির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিয়েছে। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরীক্ষার কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হবে সেগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ ইতোমধ্যেই শেষ করেছে সংশ্লিষ্টরা।

বিষয়টি স্বীকার করে পিএসসি চেয়ারম্যান মো. সোহবার হোসাইন ঢাকা পোস্ট-কে বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগামী ১৯ মার্চ থেকে ৪২তম বিসিএস পরীক্ষার প্রিলিমিনারি পরীক্ষা শুরু হবে। প্রতিটি বেঞ্চে একজন করে বসবেন। আসন বিন্যাস হবে ইংরেজি ‘Z’ আকৃতির।

পিএসসি চেয়ারম্যান বলেন, পরীক্ষা আয়োজনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চেয়ে আবেদন করলে তারা সম্মতি দিয়েছে। একই পদ্ধতিতে ৪১তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা নেওয়া হবে। আর ৪৩তম বিসিএসে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা আগস্টে হবে। ওই সময় পরিস্থিতি ভালো হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।

জানা গেছে, ৪২তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা ১৯ মার্চ শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত রাজধানীতে বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র অনুষ্ঠিত হবে। এ বিসিএসের আবেদন শুরু হয় গত বছরের ৭ ডিসেম্বর এবং শেষ হয় ২৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায়। ৪২তম বিসিএসে সহকারী সার্জন হিসেবে দুই হাজার জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে।

৪২তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, এ বিসিএসে (বিশেষ) এমসিকিউ টাইপসহ ৩০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। এর মধ্যে ২০০ নম্বরের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা (এমসিকিউ টাইপ) হবে। আর ১০০ নম্বরের হবে মৌখিক পরীক্ষা। ২০০ নম্বরের পরীক্ষার জন্য প্রার্থীরা সময় পাবেন দুই ঘণ্টা।

প্রিলিমিনারিতে মেডিকেল সায়েন্স (১০০), বাংলা (২০), ইংরেজি (২০), বাংলাদেশ বিষয়াবলি (২০), আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি (২০), মানসিক দক্ষতা (১০) ও গাণিতিক যুক্তির (১০) ওপর পরীক্ষা হবে। পরীক্ষায় প্রতিটি শুদ্ধ উত্তরের জন্য প্রার্থী এক নম্বর পাবেন। তবে ভুল উত্তর দিলে প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য প্রাপ্ত মোট নম্বর থেকে দশমিক ৫০ নম্বর কাটা যাবে।

এর আগে ১৯ জানুয়ারি সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আন্তঃমন্ত্রণালয়ের একটি সভা হয়। সভায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নিতে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চাওয়া হয় পিএসসি থেকে। সভায় এসব মন্ত্রণালয়ের সচিব ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

ওই সভায় করোনার কারণে ৪১তম বিসিএসে পরীক্ষা কেন্দ্র বাড়ানোর প্রস্তাব করে এসব কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা, নিরাপত্তার জন্য শিক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চায় পিএসসি। সভায় পিএসসি পক্ষ থেকে বলা হয়, পরীক্ষা কেন্দ্রগুলো প্রতিটি বেঞ্চে একজন পরীক্ষার্থীকে বসানো হবে এবং ইংরেজি অক্ষর ‘Z’ আকারের হবে।

এদিকে, বিভিন্ন ক্যাডারে দুই হাজার ১৩৫ জনকে নিয়োগ দিতে গত বছরের ২৭ নভেম্বর ৪১তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। এতে রেকর্ড সংখ্যক চার লাখ ৭৫ হাজার জন আবেদন করেছেন।

এনএম/এফআর