দেশে সাড়ে ৫ কোটি মানুষের ভ্যাকসিনের প্রয়োজন নেই: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
মহাখালীতে ব্রিফ করছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশের প্রায় সাড়ে ৫ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বয়স ২৫ বছরের নিচে। আর ১৮ বছরের নিচে ৪০ শতাংশ মানুষ। এ মুহূর্তে এদের ভ্যাকসিনের দরকার নেই। এছাড়া গর্ভবতী নারী ও কিছু অন্য জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীদের এ ভ্যাকসিন দেওয়া হবে না।’
বিজ্ঞাপন
রোববার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে মহাখালীর ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের দুইটি ভ্যাকসিন ল্যাব পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যাদের ভ্যাকসিন দিচ্ছি এ সংখ্যা প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি হবে। প্রথম ধাপে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনের তিন কোটি ভ্যাকসিন ধাপে ধাপে দিতে ছয় মাস লাগবে'।
বিজ্ঞাপন
জাহিদ মালেক বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্তৃক কোভ্যাক্সের ভ্যাকসিন আসবে মে ও জুন মাসে। ইতোমধ্যে তাদের দেওয়া সব কাজগপত্র সই করে পাঠিয়েছি। তারা আমাদের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিন দেবে। এতে করে আমাদের প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষ ভ্যাকসিনের আওতায় চলে আসবে। তাদের ভ্যাকসিন দিতে প্রায় এক বছরের বেশি সময় লাগবে। সে লক্ষ্যে সব প্রস্তুতি আমরা নিয়ে রেখেছি। এটা নিয়ে আমাদের বিশেষজ্ঞ টিম যথাযথভাবে কাজ করছে। আমাদের পর্যাপ্ত জনবলও রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনার নতুন ধরন দেখা দিয়েছে। সেটা বাংলাদেশে নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা এয়ারপোর্টে বলে দিয়েছি, যারা ইউরোপ থেকে আসবে তাদের আলাদা লাইনের মাধ্যমে বের করতে। পাশাপাশি যারা করোনার সার্টিফিকেট না নিয়ে আসবে তাদের তিনদিনের পরিবর্তে সাতদিনের কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা অন্যান্য রোগের নরমাল ভ্যাকসিন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। একইসঙ্গে করোনা ভ্যাকসিন কার্যক্রমও চালিয়ে যাবো। আমাদের চিকিৎসক, নার্স ও টেকনেশিয়ানরা দক্ষতার সঙ্গে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। প্রথম ধাপে স্বাস্থ্যকর্মী, গণমাধ্যমকর্মী, বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যসহ ষাটোর্ধ্বদের সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভ্যাকসিন সংরক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় ফ্রিজিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে জেলা হাসপাতালগুলোতে। পরিবহনের জন্য কোল্ড বক্স কেনার প্রক্রিয়া চলছে। বাংলাদেশের ওষুধ পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক মানের ল্যাব তৈরি হয়েছে। গত মার্চ মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এর স্বীকৃতি দিয়েছে। এতে বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পের মান নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকবে না।’
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।
টিআই/এসএম