নাইন ইলেভেনের মতো ক্যাপিটলে হামলার তদন্তে কমিশন গঠনের ঘোষণা
মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি
যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের প্রতীক ক্যপিটল ভবনে ট্রাম্প সমর্থকদের হামলার ঘটনা তদন্তে স্বাধীন কমিশন গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। স্থানীয় সময় সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশে দেওয়া চিঠিতে তিনি এই ঘোষণা দেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
চিঠিতে আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশে পেলোসি বলেন, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এবং পেন্টাগনে সন্ত্রাসী হামলার পর যেভাবে তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছিল, গত ৬ জানুয়ারির ক্যাপিটল ভবনে ট্রাম্প সমর্থকদের হামলার ঘটনা তদন্তে ঠিক একইরকম কমিশন গঠন করা হবে। তিনি বলেন, ‘(ক্যাপিটলে) কিভাবে এই হামলার ঘটনা ঘটল, এর সত্য আমাদেরকে জানতেই হবে।’
বিজ্ঞাপন
এর আগে ক্যাপিটলে হামলায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগ থেকে ট্রাম্পকে মুক্তি দেয় সিনেট। সিনেটে ভোটাভুটিতে ৫৭-৪৩ ভোটে অভিশংসন থেকে রেহাই এবং একইসঙ্গে হামলায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগ থেকে মুক্তি পান ট্রাম্প। কোনো প্রেসিডেন্টকে অভিশংসিত করতে হলে ১০০ সদস্যের সিনেটে দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে ট্রাম্পকে অভিশংসিত করতে হলে ৬৭ জন সিনেটরকে ভোট দিতে হতো। কিন্তু অভিশংসনের পক্ষে ভোট দেন ৫৭ জন। আর বিপক্ষে ৪৩ জন। ১০ ভোট কম পাওয়ায় অভিশংসনের হাত থেকে সিনেটে দ্বিতীয়বারের মতো রক্ষা পেলেন ট্রাম্প। তবে সিনেটে ট্রাম্পের অভিশংসনের পক্ষে ভোট দিয়েছেন ৭ জন রিপাবলিকান সদস্য।
বিজ্ঞাপন
পেলোসি বলেন, হামলার পর থেকে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ক্যাপিটল হিলের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আরও কি কি পরিবর্তন আনা প্রয়োজন তা মূল্যায়ন করেছেন মার্কিন সামরিক বাহিনীর লে. জেনারেল রাসেল হনোরি।
তিনি আরও বলেন, ‘এই কমিশন হামলার পেছনের বিভিন্ন খুটিনাটি বিষয় তদন্ত করবে। এছাড়া হামলার কারণ এবং ক্ষমতার শান্তিপূর্ণ হস্তান্তরের বাধার বিষয়েও তদন্ত করবে। পাশাপাশি হামলার আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন শাখার প্রস্তুতি ও হামলা ঠেকাতে তাদের কর্মকাণ্ড নিয়েও তদন্ত করবে কমিশনটি।’
জো বাইডেনের ক্ষমতাগ্রহণের মাত্র দুই সপ্তাহ আগে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের প্রতীক ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল ভবনে সশস্ত্র হামলা ও সহিংসতা চালায় ট্রাম্প সমর্থকরা। এতে এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ নিহত হয় পাঁচ জন। সমর্থকদের চালানো এই হামলায় ট্রাম্প উস্কানি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এই অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো প্রতিনিধি পরিষদে অভিশংসিত হয়েছিলেন ট্রাম্প। এর মাধ্যমে লজ্জার বিরল এক ইতিহাসও গড়েছিলেন তিনি। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে মাত্র দু’জন প্রেসিডেন্ট অভিশংসিত হয়েছিলেন। কিন্তু মাত্র এক বছরের কিছু বেশি সময়ের মধ্যে দেশটির প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প লজ্জাজনকভাবে দু’বার অভিশংসিত হন।
তবে প্রথমবারের মতো দ্বিতীয়বারও চূড়ান্ত অভিশংসনের হাত থেকে সিনেটে রেহাই পান ট্রাম্প।
সূত্র: বিবিসি
টিএম