তিব্বতে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস স্থাপন, চীনের অযাচিত হস্তক্ষেপ রোধ এবং নির্বাসিত নেতা দালাাই লামার স্বদেশে প্রত্যাবর্তন ও ক্ষমতাসীন হওয়ার প্রসঙ্গে সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মতামতের সমর্থনে আন্তর্জাতিক জোট গঠনবিষয়ক একটি বিলে স্বাক্ষর করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। 

এর ফলে ‘দি তিব্বতিয়ান পলিসি অ্যান্ড সাপোর্ট বিল ২০২০’ শীর্ষক বিলটি এখন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আইনে পরিণত হল। এই আইনের আওতায় যুক্তরাষ্ট্র সরকার তিব্বত সম্পর্কিত বিভিন্ন কর্মসূচি এবং নীতি গ্রহণ এবং পুনর্বিন্যাস করতে পারবে।

রোববার যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় প্রণোদনা ও সরকারি ব্যয়ের ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি ডলারের আর্থিক প্রণোদনা বিলে স্বাক্ষরের পাশাপাশি এই বিলটিতেও স্বাক্ষর করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। চীনের ব্যাপক আপত্তি ও প্রতিবাদ সত্ত্বেও গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে বিলটি পাস হয়।

পাস হওয়া বিল বা আইনের আওতায় তিব্বতের জনগণের সমর্থনে গঠিত সব বেসরকারি সংস্থাকে সহযোগিতা করতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। এছাড়া যতদিন তিব্বতের রাজধানী লাসায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস স্থাপন না হচ্ছে, ততদিন চীনের দূতাবাস স্থাপনেও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে আইনে।

তিব্বত সংক্রান্ত যাবতীয় ইস্যু সমন্বয় করার জন্য লাসায় যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বিশেষ সমন্বয়কারীর কার্যালয় স্থাপন করা হবে এবং এই পদে যিনি থাকবেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তিব্বতের কূটনৈতিক যোগাযোগ রক্ষার পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে দালাই লামার পক্ষে আন্তর্জাতিক জনমতকে শক্তিশালী করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ তিনি নেবেন।  

এছাড়া লাসায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস স্থাপনে চীন বাধা দিলে সেখানে চীনের দূতাবাস স্থাপনে বিধিনিষেধ আরোপে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষমতাও এখন থেকে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। 

অর্থাৎ পাস হওয়া আইন অনুযায়ী, চতুর্দশ দালাই লামার মৃত্যুর পর তিব্বতের রীতি অনুযায়ী তার উত্তরাধিকারী হিসেবে পঞ্চদশ দালাই লামার ক্ষমতা গ্রহণের পথে তিব্বতের প্রতিবেশি দেশ চীনের হস্তক্ষেপ প্রতিহত করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেয়ার এখতিয়ার এখন রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের।

দীর্ঘদিন ধরে তিব্বতকে দখলে রাখা চীন চতুর্দশ দালাই লামাকে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। তিব্বত ইস্যুতে ইতোমধ্যে চীনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভ্রমণবিষয়ক নিষেধাজ্ঞাসহ কয়েকটি নিষেধাজ্ঞার অনুমোদন দিয়েছে মার্কিন কংগ্রেস।

তিব্বতের ৬০ লাখ অধিবাসী ২০১১ সালে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে যে রায় দিয়েছিলেন, চতুর্দশ দালাই লামার অবস্থান ছিল তার পক্ষে। ওই বছর ভোটের মাধ্যমে ২৩ জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করেছিলেন তিব্বতের জনগণ। বর্তমানে তারা সবাই নির্বাসিত রয়েছেন।

নতুন আইনে বলা হয়েছে, ২০১১ সাল থেকে তিব্বতে গণতন্ত্রায়নের যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে তার তত্ত্বাবধানের পাশাপাশি তিব্বতের শীর্ষ আধ্যাত্মিক নেতা হিসেবে নিজের গণতান্ত্রিক দায়িত্ব পালন করবেন চতুর্দশ দালাই লামা।

সূত্র: পিটিআই।

এসএমডব্লিউ/এসএস