বিদেশিদের প্রবেশে ইন্দোনেশিয়া জাপানের নিষেধাজ্ঞা
ব্রিটেনসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরনটির ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে বিদেশি নাগরিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইন্দোনেশিয়া এবং জাপান। সোমবার এই দুই দেশ বিদেশিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বলে খবর দিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
ইন্দোনেশিয়াতে এই নিষেধজ্ঞার মেয়াদ দুই সপ্তাহ বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেত্নো মারসুদি।তিনি বলেন, আগামী ১ জানুয়ারি থেকে এই আদেশ কার্যকর হবে।
বিজ্ঞাপন
করোনাভাইরাসের নতুন ধরন শনাক্তের ঘটনায় ব্রিটেন থেকে আসা যাত্রীদের দেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা এবং ইউরোপ ও অস্ট্রেলিয়া থেকে আগত যাত্রীদের প্রবেশে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের পর সাম্প্রতিক এই নিষেধাজ্ঞা জারি করল ইন্দোনেশিয়া সরকার।
বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে চলতি বছরের শুরুর দিকে ব্যবসায়িক প্রয়োজন ব্যতীত অন্যান্য ভ্রমণকারীদের দেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ইন্দোনেশিয়া সরকার। সাম্প্রতিক এই নিষেধাজ্ঞা উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা ব্যতীত সব বিদেশি পর্যটকদের ক্ষেত্রে কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বিজ্ঞাপন
জনসংখ্যার বিচারে বিশ্বের চতুর্থ জনবহুল এই দেশটি কোভিড সংক্রমণে পর্যুদস্ত। গত মার্চে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ইন্দোনেশিয়ায়। তখন থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৭ লাখ ২০ হাজার মানুষ। এছাড়া প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে মারা গেছেন ২১ হাজার ৫০০ জন।
সংক্রমণ এবং মৃত্যুহারের দিক থেকে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বর্তমানে শীর্ষে থাকা ইন্দোনেশিয়ায় সোমবার নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৮৫৪ এবং মারা গেছেন ২১৫ জন।
সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে দেশটির রাজধানী জাকার্তা এবং পশ্চিম জাভা প্রদেশে। এই দুই এলাকাকে ইতোমধ্যে ‘রেড জোন’ হিসেবে ঘোষণা করেছে ইন্দোনেশিয়া সরকার।
এদিকে ব্রিটেনে করোনাভাইরোসের নতুন ধরন শনাক্তের প্রেক্ষিতে সোমবার থেকে অনাবাসিক বিদেশি নাগরিকদের দেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে জাপান।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদা সুগা দেশের নাগরিকদের ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি তার মন্ত্রিসভার সদস্যদেরও সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
জাপানের এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা (বিশেষজ্ঞ) যদিও বলছে যে টিকা করোনাভাইরাসের নতুন ধরনটির ক্ষেত্রে কার্যকর হবে না– এমন প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি। ভাইরাসের প্রচলিত ধরনটির যেসব প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে; এক্ষেত্রেও (নতুন ধরন) সেগুলোর পরিবর্তনের কোনও প্রয়োজন নেই।
তারপরও আমি বলতে চাই, এই ভাইরাস বছরের সমাপ্তি বা নতুন বছরের ছুটির মর্ম বুঝবে না। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে আমি দেশবাসীকে নতুন বর্ষ উদযাপন না করার আহ্বান জানাচ্ছি
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদো সুগা
তিনি বলেন, মন্ত্রীদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, সংক্রমণ রোধে দেশব্যাপী যেন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়- সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে।
জাপানে বর্তমানে কোভিড সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ চলছে। শনিবার কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন জাপানের সাবেক পরিবহনমন্ত্রী ইওচিরো হাতা। জাপানে এই প্রথম কোভিড সংক্রমণে কোনও আইন প্রণেতার মৃত্যু হলো। দেশটির সংবাদমাধ্যম এনএইচকে বলছে, শনিবার জাপানে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৮৮১ জন।
সূত্র: রয়টার্স।
এসএমডব্লিউ/এসএস