ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন চলছে। মোট আট দফার মধ্যে চার দফার ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এরই মধ্যে সারা ভারতের মতো রাজ্যটিতেও রেকর্ড হারে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। আর তাই এবার নির্বাচনী জমায়েতের লাগাম টেনে ধরল কলকাতা হাইকোর্ট।

আদালতের নির্দেশ, ভিড় ঠেকাতে জেলাশাসক ও কমিশনকেই দায়িত্ব নিতে হবে। প্রয়োজনে ১৪৪ ধারা ব্যবহার করা যেতে পারে। হাইকোর্টের এই নির্দেশ ইতোমধ্যেই জেলা প্রশাসক ও নির্বাচন কমিশনকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

লকডাউন এখন অতীত। নির্বাচনী আমেজে পরিপূর্ণ পশ্চিমবঙ্গে মিটিং-মিছিল-পদযাত্রার পাশাপাশি জোরকদমে চলছে প্রচার-প্রচারণা। আর এসব কর্মকাণ্ডে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো চিহ্নই নেই। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা তো দূরের কথা, এখন আর মাস্ক পরারও প্রয়োজন মনে করছেন না বেশিরভাগ মানুষ। ফলে যা হওয়ার, তাই হচ্ছে। মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে দৈনিক সংক্রমণের রেকর্ড ভাঙছে করোনাভাইরাস।

গত সোমবার রাজ্যে নতুন করে ৪ হাজার ৫১১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে শনাক্ত হয়। মহামারি শুরুর পর থেকে যা ছিল সর্বোচ্চ। এর মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে অর্থাৎ মঙ্গলবার সেই রেকর্ডও ভেঙে যায়। স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার রাজ্যটিতে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৮১৭ জন। কলকাতায় এই সংখ্যা ১ হাজার ২৭৮ জন।

এই পরিস্থিতি করণীয় ঠিক করতে আদালতের হস্তক্ষেপে চেয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলার প্রেক্ষিতে জেলাশাসক ও নির্বাচন কমিশনকে ভোটের জমায়েতে নিয়ন্ত্রণের ‘দায়িত্ব’ দিলো প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। জনসভায় সকলের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক বলেও ঘোষণা করা হয়।

মঙ্গলবার ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে ১ লাখ ৬০ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে এই মুহূর্তে ভাইরাসে আক্রান্ত সক্রিয় রোগীর সংখ্যার ভিত্তিতে সারা বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে ভারত।

এমনকি ফের আক্রান্তের সংখ্যার ভিত্তিতে ব্রাজিলকে পেছনে ফেলেছে বিশ্বের দ্বিতীয় জনবহুল দেশটি। বর্তমানে ভারতে সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৩৫ লাখ ২৫ হাজারের বেশি। অন্যদিকে ব্রাজিলে সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৩৪ লাখ ৮২ হাজার ৫৪৩ জন।

এর আগে ২০২০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যায় ব্রাজিলকে ছাপিয়ে গিয়েছিল ভারত।

টিএম