কুয়েতে সরকারের পদত্যাগ, কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে আমির
কুয়েতে নতুন মন্ত্রিপরিষদ গঠনের বিষয়ে পার্লামেন্টে আইনপ্রণেতাদের একটি প্রস্তাবনা আনার কয়েকদিন পর প্রধানমন্ত্রীর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছে দেশটির সরকার। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ সাবাহ আল-খালিদ আল-সাবাহর কাছে মন্ত্রীদের পদত্যাগপত্র পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকারি যোগাযোগ কার্যালয় (জিসিসি)।
প্রধানমন্ত্রীকে এখন বিশ্বের শীর্ষ তেল রপ্তানিকারক সংগঠন ওপেকের এই সদস্য রাষ্ট্রের শাসক আমির শেখ নওয়াফ আল-আহমেদ আল-সাবাহর কাছে অনুমোদনের জন্য এই পদত্যাগপত্র বাধ্যতামূলকভাবে দাখিল করতে হবে। কুয়েতের প্রথম সারির অন্তত তিনটি দৈনিক বলছে, মন্ত্রীদের পদত্যাগপত্র শেখ সাবাহ গ্রহণ করতে পারেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর কুয়েতের নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়। চলতি মাসের শুরুর দিকে পার্লামেন্টে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের বিষয়ে আইনপ্রণেতাদের একটি প্রস্তাব পেশের পর মন্ত্রিসভার পদত্যাগ প্রত্যাশিত বলে ধারণা করা হচ্ছিল। গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়া দেশটির নতুন আমিরের জন্য এই সঙ্কট উতড়ে যাওয়াই প্রথম রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ।
আগামী ১৯ জানুয়ারি দেশটির পার্লামেন্টের অধিবেশনে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ সাবাহ আল-খালিদ আল-সাবাহ আলোচনা করবেন। দেশটির সরকারি যোগাযোগ কার্যালয় (জিসিসি) বলছে, জাতীয় সংসদ এবং সরকারের মধ্যে উন্নয়নের আলোকে সম্পর্ক তৈরি করার লক্ষ্যে সরকার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনও তথ্য জানায়নি সরকারের এই কার্যালয়।
বিজ্ঞাপন
২০১৯ সালের শেষের দিকে কুয়েতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় আসনে শেখ সাবাহ। গত ৫ জানুয়ারি দেশটির র্পালামেন্টের নিয়মিত প্রথম অধিবেশনে তিনজন আইনপ্রণেতা প্রধানমন্ত্রীকে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের প্রস্তাব দেন। তাদের এই প্রস্তাবে সমর্থন দেন অন্য আরও ৩০ জনের বেশি সংসদ সদস্য।
প্রস্তাবে আইনপ্রণেতারা বলেন, নতুন যে মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়েছে তাতে নির্বাচনী ফলের কোনও প্রতিফলন ঘটেনি। পার্লামেন্টের স্পিকার ও সংসদীয় কমিটি গঠনেও সরকারের হস্তক্ষেপের অভিযোগ আনেন তারা।
উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উন্মুক্ত রাজনৈতিক ব্যবস্থা আছে তেল-গ্যাস সমৃদ্ধ এই দেশটির। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক পরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্য, আইনপ্রণেতা এবং মন্ত্রিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পার্লামেন্টে প্রস্তাবও আনতে পারেন আইনপ্রণেতারা।
মন্ত্রিসভা এবং সংসদের মধ্যকার অচলাবস্থা ও বারবার বিবাদের কারণে সরকারে বেশ কয়েকবার রদবদল, সংসদ ভেঙে দেয়ার ঘটনায় দেশটিতে বিনিয়োগ এবং অর্থনৈতিক সংস্কার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দেশটির অর্থনীতিতে ব্যাপক তারল্য সঙ্কট দেখা দেয়ায় সরকারের বেশ কিছু প্রচেষ্টা জটিল হয়ে উঠেছে।
সূত্র: রয়টার্স।
এসএস