যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ক্ষমতাগ্রহণের মাত্র কয়েকদিন আগে নতুন ক্ষেপণাস্ত্র সামনে এনেছে উত্তর কোরিয়া। সাবমেরিন থেকে নিক্ষেপযোগ্য নতুন ধরনের এই ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র’ বলে বর্ণনা করেছে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।

উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের উপস্থিতিতে নতুন এই ক্ষেপণাস্ত্রটি একটি কুচকাওয়াজ-এ প্রদর্শন করা হয় বলেও রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে জানায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র উত্তর কোরিয়ার ‘সবচেয়ে বড় শত্রু’ যুক্তরাষ্ট্র বলে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের মন্তব্যের কয়েকদিন পরই এই ক্ষেপণাস্ত্র সামনে আনল পিয়ংইয়ং।

এছাড়া আগামী সপ্তাহেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করবেন জো বাইডেন। ক্ষমতা গ্রহণের মাত্র কয়েকদিন আগে নতুন ক্ষেপণাস্ত্র সামনে আনাকে ইঙ্গিতপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, সাদা ও কালো রংয়ের কমপক্ষে চারটি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্যারেডে প্রদর্শন করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সর্বশেষ প্রদর্শিত এই ক্ষেপণাস্ত্র এর আগে সামনে আনা হয়নি।

এর আগে গত সপ্তাহে এক অনুষ্ঠানে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন বলেন,‘যুক্তরাষ্ট্রকে পরাজিত করার লক্ষ্য নিয়েই আমাদের কাজ করতে হবে। তারা (যুক্তরাষ্ট্র) আমাদের প্রধান শত্রু এবং উন্নয়নের বড় বাধা।’

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতাগ্রহণের মাত্র ১১ দিন আগে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পরেও তার সঙ্গে কথার যুদ্ধে জড়িয়েছিলেন তিনি। পরে অবশ্য ট্রাম্প-কিমের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠে।

বাইডেনের ক্ষমতাগ্রহণের দিকে ইঙ্গিত করে কিম জং উন বলেন,‘যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় কে রয়েছে সেটা কোনো বিষয় না। ক্ষমতায় যেই থাকুক না কেন উত্তর কোরিয়ার প্রতি ওয়াশিংটনের নীতি কখনোই পরিবর্তন হবে না।’

এসময় পিয়ংইয়ংয়ের পারমাণবিক সক্ষমতা আরও বাড়ানোসহ সাম্রাজ্যবাদবিরোধী কর্মকাণ্ড বিস্তৃত করার অঙ্গীকার করেন তিনি।

উত্তর কোরিয়াকে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত করতে অটল যুক্তরাষ্ট্র। তবে পিয়ংইয়ং কখনো জনসমক্ষে বলেনি, তারাও সেটা চায়। পারমাণবিক কর্মসূচির কারণে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞায় বিপর্যস্ত উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতি। ফলে দেশটি সেই নিষেধাজ্ঞা থেকে বেরোতে চায়।

উল্লেখ্য, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে তিন বার বৈঠকে বসেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কিম জং-উন। পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের বিনিময়ে উত্তর কোরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার প্রশ্নে সিঙ্গাপুর ও ভিয়েতনামে প্রথম দুই দফা বৈঠকে বসেন কিম-ট্রাম্প।

সবশেষ ২০১৯ সালের জুলাই মাসে তাদের বৈঠক হয় দুই কোরিয়ার সীমান্তে অবস্থিত পানমুনজমের একটি বেসামরিক এলাকায়। এর কোনোটিতেই আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি।

টিএম