শপথের আগেই ব্যাপক আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা বাইডেনের
ক্ষমতা গ্রহণের আগেই বিরাট অংকের প্রণোদনা প্যাকেজের ঘোষণা দিয়েছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত মার্কিন অর্থনীতির জন্য তার ঘোষিত এই প্রণোদনা প্যাকেজের আকার এক লাখ ৯০ হাজার কোটি (১.৯ ট্রিলিয়ন) ডলার।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা নেওয়ার এক সপ্তাহ আগেই তিনি মার্কিন নাগরিকদের এ সুখবর দিলেন।
বিজ্ঞাপন
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাইডেনের ঘোষণা করা এই প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের আগে কংগ্রেসের অনুমোদন লাগবে। কংগ্রেসে অনুমোদন পেলে মার্কিন পরিবারগুলোর জন্য বরাদ্দ থাকবে এক লাখ কোটি ডলার।
এই বরাদ্দ থেকে প্রত্যেক মার্কিন নাগরিক সরাসরি এক হাজার ৪০০ ডলার করে পাবে। এছাড়া করোনা মোকাবিলায় ব্যয় হবে ৪১ হাজার পাঁচশ’ কোটি ডলার আর ছোট ব্যবসাগুলোর জন্য বরাদ্দ থাকবে ৪৪ হাজার কোটি ডলার।
বিজ্ঞাপন
জো বাইডেন বলেছেন, করোনা মহামারিতে আমেরিকার নাগরিকদের দুর্ভোগ বেড়েছে। নষ্ট করার মতো সময় আমাদের হাতে নেই। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ঝুঁকির মধ্যে আছে। আমাদের আরও কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন,‘সামনে বাধা আসবে। তবে আমি আপনাদের কাছে সবসময় সৎ থাকবো, যে কতটুকু উন্নতি আমরা করতে পেরেছি, আর কোন কোন বাধার মুখে আমরা পড়ছি।’
গত বছর নির্বাচনী প্রচারণার সময় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে ভালোভাবে করোনা মহামারি মোকাবিলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বাইডেন।
এদিকে বাইডেনের শপথ গ্রহণকে কেন্দ্র করে নতুন করে সহিংসতার শঙ্কায় রাজধানী অঞ্চল ওয়াশিংটন ডিসিসহ যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে নেওয়া হয়েছে কঠোর ও নজিরবিহীন নিরাপত্তা।
মোড়ে মোড়ে তৈরি হয়েছে নিরাপত্তাবেষ্টনী। বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন সড়ক ও সাবওয়ে স্টেশন। পুলিশ তো থাকছেই, তারপরও ওয়াশিংটন ডিসিতে হাজার হাজার আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
আগামী সপ্তাহে জো বাইডেনের অভিষেক উপলক্ষে গণহারে ওয়াশিংটনে আসছে যুক্তরাষ্ট্রের আধা সামরিক বাহিনী দ্য ন্যাশনাল গার্ড সদস্য। অভিষেকের দিন কিংবা আগে পরে যে কোনো সহিংসতা ঠেকানোই যার লক্ষ্য।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল হিলে হামলায় সমর্থকদের উসকানি দেওয়ার অভিযোগে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে অভিশংসিত হয়েছেন।
ট্রাম্প তার সমর্থকদের সহিংসতা এড়ানোর আহ্বান জানালেও যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী অঞ্চল ওয়াশিংটনে ন্যাশনাল গার্ডের বিশ হাজার সেনা মোতায়েন শুরু হয়েছে। ২০১৬ সালে ট্রাম্পের অভিষেকে সংখ্যাটা ছিল ৮ হাজার।
গত সপ্তাহের ওই সহিংসতার পর ক্যাপিটল হিল ২৪ ঘণ্টা পাহারা দিচ্ছে ন্যাশনাল গার্ড। ক্যাপিটল হিলের মেঝেতে ডজন ডজন ‘অফ-ডিউটি’ গার্ডের ঘুমানো এবং গায়ে গা ঘেষে শুয়ে থাকার ছবি এখন ভাইরাল।
কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটল হিলের ভেতরে যেমন দাঙ্গা ঠেকানোর বর্ম ও গ্যাস মাস্ক পরে আছেন গার্ডরা, তেমনি ক্যাপিটল হিলের বাইরে চারপাশের এলাকায় বন্দুক কাঁধে পাহারা দিচ্ছেন শত শত ন্যাশনাল গার্ডের সদস্য।
গত শুক্রবার থেকেই কংগ্রেসে সেনারা আছে। আগামী ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত জরুরি অবস্থা জারি হওয়া ওয়াশিংটন ডিসির ভারপ্রাপ্ত পুলিশ প্রধান রবার্ট কন্তে আজ বলেছেন, অভিষেকের আগে আরও সেনা মোতায়েন হবে।
ক্যাপিটল হিলের চারপাশের সড়কগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ন্যাশনাল পার্ক সার্ভিসও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পথচারীদের এর আশেপাশে দিয়ে না হাঁটার নির্দেশনা জারি করেছেন মেয়র মুরিয়েল বাউসার।
সূত্র: বিবিসি
টিএম