রাজনৈতিক বিভাজন নিরসনের লক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এ বছরের মাঝমাঝি পার্লামেন্ট ও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়ায় পনেরো বছর পর ফিলিস্তিনিদের জন্য ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ তৈরি হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট আব্বাসের কার্যালয় শুক্রবার জানিয়েছে, প্যালেস্টানিয়ান অথরিটি (পিএ)— যারা ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীর শাসন করে— আগামী ২২ মে পার্লামেন্ট ও ৩১ জুলাই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আয়োজন করবে। 

ফিলিস্তিনিরা শেষবার ভোট দিয়েছিল ২০০৬ সালে। তাতে বিস্ময়করভাবে হামাস জয়ের সূত্রে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক কোন্দল বাড়লে ২০০৭ সালে গাজা নিজেদের দখলে দেয় হামাস। এরপর আর নির্বাচন হয়নি।  

২০০৭ সাল থেকেই গাজা অবরোধ করে রেখেছে ইসরায়েল। পশ্চিম তীর থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন গাজা উপত্যকা হামাস নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর থেকে ইসরায়েল সেখানে আগ্রাসন বাড়িয়েছে। 

নির্বাচনে হামাস ও ফাতাহ এর মধ্যে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

আব্বাসের কার্যালয়ের ডিক্রিতে বলা হয়েছে, ‘নির্বাচন কমিটি এবং সব রাষ্ট্রযন্ত্রকে স্বদেশের প্রতিটি শহরে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশনা দিচ্ছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।’

প্রেসিডেন্টের ডিক্রিতে স্বদেশের প্রতিটি শহর বোঝাতে অধিকৃত পশ্চিম তীর, গাজা ও অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের সব শহরে নির্বাচন আয়োজনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

বিবৃতিতে বলা হচ্ছে, পূর্ব জেরুজালেমসহ ফিলিস্তিনের সব সরকার ভোটে অংশ নেবে বলে প্রত্যাশা করছেন আব্বাস। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে ইসরায়েল পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নিলেও ফিলিস্তিন একে অধিকৃত বলে।  

পূর্ব জেরুজালেমে প্যালেস্টানিয়ান অথরিটির সব কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে ইসরায়েল। সেখানে তারা ভোট হতে দেবে বলে মনে হয় না। এছাড়া অখণ্ড জেরুজালেমকে নিজেদের রাজধানী বিবেচনা করে ইসরায়েল।   

নির্বাচনের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে হামাস। গাজার শাসক দলটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ‘আজকের দিনটিতে পৌঁছানোর জন্য বিগত কয়েক মাসে অনেক বাধাবিপত্তির সমাধান করতে হয়েছে আমাদের।’ 

অতীতের ব্যর্থ প্রচেষ্টা

আব্বাসের ফাতাহ ও হামাসের পক্ষে নির্বাচন বিরাট ঝুঁকি তৈরি করবে। কারণ উভয়ই সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পারস্পরিক সহাবস্থান, রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে ফিলিস্তিনিদের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন এবং তাদের শাসিত অঞ্চলগুলোতে মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে অক্ষমতার কারণে বিক্ষোভের মুখে পড়েছিল উভয় দল।

বিগত দশ বছর ধরে প্রকাশ্যে নির্বাচনের কথা বলে আসছে ফাতাহ এবং হামাস। কিন্তু বিবাদ ও দ্বন্দ্বগুলোর সমাধান করে কেউই নির্বাচন আয়োজনের মতো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারছিল না।  

২০০৬ সালের নির্বাচনের পর ফাতাহ ও হামাসের সংঘর্ষ এক বছরের বেশি সময় স্থায়ী ছিল। ২০০৭ সালে হামাসের গাজা উপত্যকা দখল নেয়। এরপর ইসরায়েলি-মিশরীয় অবরোধ সত্ত্বেও তারাই গাজা শাসন করছে।

এএস