মধ্য আফ্রিকায় বিদ্রোহীদের হামলায় দুই বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী আহত
মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রে (সিএআর) বিদ্রোহীদের হামলায় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে নিয়োজিত বুরুন্ডির এক শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন। এই হামলায় বাংলাদেশি দুই শান্তিরক্ষী সামান্য আহত হয়েছেন; বর্তমানে তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে জাতিসংঘের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
শুক্রবার রাতে মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রে জাতিসংঘের মাল্টিডাইমেনশনাল ইন্টেগ্রেটেড স্ট্যাবিলাইজেশন মিশনের (এমআইএনইউএসসিএ) বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বুরুন্ডির ওই শান্তিরক্ষী বিদ্রোহী একটি গোষ্ঠীর সংঘবদ্ধ হামলায় নিহত হয়েছেন। মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রের দক্ষিণাঞ্চলের শহর গ্রিমারির কাছে বুরুন্ডি এবং বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা অভিযান পরিচালনার সময় আক্রান্ত হন।
বিজ্ঞাপন
বিদ্রোহীরা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের লক্ষ্য করে পরপর দু’বার হামলা চালায়। এতে দ্বিতীয় হামলায় বুরুন্ডির এক শান্তিরক্ষী নিহত হন।
হামলায় দুই বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী সামান্য আহত হয়েছেন; তাদের চিকিৎসা চলছে।
বিজ্ঞাপন
তুরস্কের সরকারি সংবাদসংস্থা আনাদোলু এজেন্সি বলছে, সিএআরে জাতিসংঘ মহাসচিবের নিয়োজিত বিশেষ প্রতিনিধি এবং এমআইএনইউএসসিএ’র প্রধান মানকার নায়ায়ে গ্রিমারিতে নিহত বুরুন্ডির শান্তিরক্ষীর প্রতি শ্রদ্ধা, পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানিয়েছেন। হামলায় আহত দুই বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন তিনি।
গত বছরের ২০ ডিসেম্বরে নির্বাচনে সাবেক প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কোস বোজিজির প্রার্থীতা বাতিল হয়ে যাওয়ার পর থেকে দেশটিতে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। ২০০৩ সালে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে সাবেক এই সেনা জেনারেল মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রের ক্ষমতা দখল করেন। ২০১৩ সালে এক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন তিনি।
ফ্রাঙ্কোস বোজিজির ঘনিষ্ঠ কিছু মিলিশিয়া গোষ্ঠী তখন থেকে বেসামরিক নাগরিক, সশস্ত্র বাহিনী ও জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।
গত কয়েক সপ্তাহে আফ্রিকার দারিদ্রপীড়িত এই দেশটিতে বিদ্রোহীদের হামলা, সহিংসতায় অন্তত সাত শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রে সব ধরনের সশস্ত্র সহিংসতা অবিলম্বে অবসানের আহ্বান জানিয়েছে। ডিসেম্বর পর্যন্ত মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রের প্রায় ৬০ হাজার মানুষ দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন।
শুক্রবার জাতিসংঘের এক বিশেষজ্ঞ বলেছেন, মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রে দায়মুক্তি অব্যাহত থাকলে তা সহিংসতা এবং বিক্ষোভে জ্বালানি জোগাবে। যদি হামলাকারী, তাদের সহযোগী, মানবাধিকারের লঙ্ঘনকারী এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘনকারীদের গ্রেফতার এবং বিচারের আওতায় আনার চেষ্টা না করা হয় তাহলে এ ধরনের সহিংসতা বৃদ্ধি পাবে।
এসএস