করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। রোববার (১৭ জানুয়ারি) মহামারি মোকাবিলার সম্মুখযোদ্ধা এক নার্সকে করোনা টিকার প্রথম ডোজ দেওয়ার মাধ্যমে দেশটি এই কর্মসূচি শুরু করে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

টিকা নেওয়া ওই নার্সের নাম মনিকা কালাজানস। ৫৪ বছর বয়সী এই নার্স সাও পাওলোর বাসিন্দা। তিনি চীনের সিনোভ্যাকের তৈরি কোভিড-১৯ টিকা করোনাভ্যাক নেন।

এর আগে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি টিকা ও চীনের সিনোভ্যাকের তৈরি করোনাভ্যাক টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয় ব্রাজিল। এরপরই টিকাদান কর্মসূচি শুরু করা হয়।

করোনায় আক্রান্ত ও প্রাণহানির দিক থেকে সবচেয়ে বিপর্যস্ত দেশগুলোর তালিকায় একেবারে ওপরের দিকে অবস্থান ব্রাজিলের। ওয়ার্ল্ডোমিটারসের তথ্য অনুযায়ী, করোনায় আক্রান্তের দিক দিয়ে দেশটির অবস্থান তৃতীয়। তবে প্রাণহানির দিক থেকে তাদের অবস্থান তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে।

দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৮৪ লাখ ৮৮ হাজারের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন প্রায় দুই লাখ ১০ হাজার মানুষ। এর থেকে বেশি সংখ্যক মানুষ মারা গেছেন কেবল যুক্তরাষ্ট্রে। করোনা মহামারি এতটা প্রকট হওয়ার পরও প্রতিবেশী একাধিক দেশের তুলনায় বেশ দেরিতেই টিকাদান কর্মসূচি শুরু করল ব্রাজিল।

এর আগে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও চীনের সিনোভ্যাকের তৈরি করোনাভ্যাক টিকার ব্যাপারে সবুজ সংকেত দেয় ব্রাজিলের স্বাস্থ্যবিষয়ক নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘আনভিসা’। এরপরই দেশটির ২৭ প্রদেশে এই দুই সংস্থার তৈরি টিকা পাঠানোর কাজ শুরু হয়।

চলমান মহামারির শুরু থেকেই ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না দিয়ে করোনাভাইরাসকে তাচ্ছিল্য করে আসছিলেন। কিন্তু দেশটিতে করোনা দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর থেকে নতুন করে সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।

করোনা মহামারি ইস্যুটি এখন মূলত ব্রাজিলের রাজনীতির গভীরে ঢুকে গেছে। প্রেসিডেন্ট বোলসোনারো অব্যাহতভাবে করোনা টিকার সমালোচনা করে যাচ্ছেন এবং টিকা অনুমোদনের অনুষ্ঠানেও তিনি অনুপস্থিত ছিলেন।

তারপরও নিজেই করোনা টিকা উৎপাদন করতে চায় ব্রাজিল। দেশটির মোট ২১ কোটি ১০ লাখ মানুষের জন্য করোনা টিকা উৎপাদন করতে স্থানীয় দুটি বায়োমেডিকেল সেন্টারকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্রাজিলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এডুয়ার্ডো পাজুয়েলো।

সূত্র: বিবিসি

টিএম