তৃণমূল কংগ্রেসের এক সময়কার প্রভাবশালী নেতা ও মমতা সরকারের সাবেক মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী সম্প্রতি বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর বিধানসভা নির্বাচনের আগে খোদ মমতা বন্দোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। 

শুভেন্দুর নন্দীগ্রাম সফরে গিয়ে সোমবার মমতা ওই আসন থেকে বিধানসভা নির্বাচনে লড়ার ঘোষণা দেওয়ার পর মঙ্গলবার শুভেন্দু চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন যে, মমতা তার কাছে ৫০ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হবে।

এক সময় মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ‘ডানহাত’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন শুভেন্দু মমতাকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেছেন, তিনি ৫০ হাজার ভোটে মুখ্যমন্ত্রীকে হারাতে না পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেবেন।

দুই দশকেরও বেশি সময় তৃণমূল কংগ্রেস ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। নন্দীগ্রামে তিনিই ছিলেন মমতার মূল সেনাপতি। সেই শুভেন্দুই এখন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) লোক।

সম্প্রতি ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এর উপস্থিতিতে নন্দীগ্রামে এক সভায় বিজেপিতে যোগ দেন শুভেন্দু।

নন্দীগ্রামে মমতার ঘোষণার পর মমতার ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত দক্ষিণ কলকাতায় দাঁড়িয়ে শুভেন্দু জানিয়ে দেন, মুখ্যমন্ত্রীর চ্যালেঞ্জ তিনি গ্রহণ করছেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

সভাপতি দিলীপ ঘোষ ছাড়াও বিজেপির একাধিক রাজ্য নেতার উপস্থিতিতে শুভেন্দু বলেন, ‘নন্দীগ্রামে মাননীয়াকে (মমতা বন্দোপাধ্যায়) যদি অর্ধলক্ষ ভোটে হারাতে না পারি, তাহলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব।’

সোমবার রাতেই অবশ্য নন্দীগ্রামে নিজের নির্বাচনের বিষয়টি খানিকটা স্পষ্ট করে দেন শুভেন্দু। এক টুইট বার্তা তিনে লিখেছেন, ‘স্বাগতম দিদি। ২১ বছর সঙ্গে ছিলাম। এবার‌ নন্দীগ্রামে সামনা-সামনি দেখা হবে আমাদের।’

২০১১ সালের নির্বাচনে নন্দীগ্রাম ছিল গুরুত্বপূর্ণ। ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ নন্দীগ্রামে গুলি চালিয়েছিল তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকারের পুলিশ। তখন ১৪ জন নিহত হয়েছিলেন। বেশ কিছু মানুষ নিখোঁজও হয়েছিলেন।

নন্দীগ্রামকে ইস্যু করেই বামফ্রন্টকে হটিয়ে প্রথমবার সরকার গড়ে মমতার তৃণমূল। সেখানে তার প্রধান সেনাপতি ছিলেন শুভেন্দু। বস্তুত, পুরো অধিকারী পরিবারই পূর্ব মেদিনীপুরের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

২০১১ সালের পর পশ্চিমবঙ্গের আরও একটি বিধানসভা নির্বাচন ও দুটি লোকসভা নির্বাচন হয়েছে। প্রতিবার পূর্ব মেদিনীপুরে শুভেন্দুসহ গোটা অধিকারী পরিবারকে গুরুত্ব দিলেও সেই শুভেন্দুই এখন বিজেপিতে।

তাই জেদি ও একগুঁয়ে হিসেবে পরিচিত তৃণমূল নেত্রী মমতা আগামী এপ্রিলের বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির উত্থান ঠেকাতে সবরকম চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি ও তার দল।
 
এএস