কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় স্থাপন করছে মিসর-কাতার
দীর্ঘদিনের বিবাদের অবসানে আরব চুক্তির আওতায় প্রথম দেশ হিসেবে কাতারের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় শুরু করতে রাজি হয়েছে মিসর। বুধবার মিসরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন ও সমর্থনের অভিযোগ এনে ২০১৭ সালের জুনে কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের পাশাপাশি স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে অবরোধ আরোপ করে সৌদি নেতৃত্বাধীন কয়েকটি দেশ। যদিও দোহা শুরু থেকেই সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
বিজ্ঞাপন
মধ্যপ্রাচ্যের দীর্ঘদিনের এই সঙ্কটের সমাধানে চলতি মাসের শুরুর দিকে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন এবং মিসর কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক, বাণিজ্যিক এবং ভ্রমণ সম্পর্ক পুনরায় স্থাপনে রাজি হয়। মিসরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি বলছে, ২০ জানুয়ারি মিসর এবং কাতারের মাঝে দু’টি আনুষ্ঠানিক সমঝোতা স্মারক বিনিময় হয়েছে; এতে উভয় দেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় শুরু করতে সম্মত হয়েছে।
গত শনিবার সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে কাতারে পুনরায় দূতাবাস চালু করবে সৌদি আরব। পাশাপাশি উভয় দেশের মধ্যে পুরোমাত্রায় কূটনৈতিক সম্পর্কের যাত্রাও শুরু হবে।
বিজ্ঞাপন
রিয়াদের পথ অনুসরণ করে কাতারের জন্য সব ধরনের প্রবেশপথ উন্মুক্ত করেছে মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। তবে কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় শুরু করতে আরও সময় লাগবে বলে জানিয়েছে দেশটি। কাতারের জন্য নিজেদের আকাশপথ খুলে দিয়েছে বাহরাইনও; যে পথে আগেই হেঁটেছে মিসর।
মধ্যপ্রাচ্যে ইরানবিরোধী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় সম্প্রতি সৌদি আরবের নেতৃত্বে এক চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এই চুক্তির আওতায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্থাপন এবং মধ্যপ্রাচ্যের কূটনৈতিক সঙ্কটের সমাধানের রাস্তা তৈরি হয়।
২০১৭ সালে মধ্যপ্রাচ্যে একঘরে হয়ে পড়ার সময়ই মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে কাতারের প্রতি আহ্বান জানায় মিসর। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা বন্ধ, ইরান ঘনিষ্ঠতা কমিয়ে আনা-সহ দোহাকে ১৩টি শর্ত দিয়ে সেই সময় সম্পর্ক স্বাভাবিকের উপায় জানিয়ে দেয় সৌদি নেতৃত্বাধীন দেশগুলো।
তবে দোহা এসব শর্ত কাতারের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত জানিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করে।
বৃহস্পতিবার কাতারের সরকারি একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, মিসরের সঙ্গে কোনও ধরনের বৈঠক হয়নি। তবে রিয়াদের আল-উলা চুক্তির সময় বিনিময় হওয়া সমঝোতা স্মারকের আওতায় কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় স্থাপন করবে কায়রো এবং দোহা।
এসএস