সমুদ্রসীমায় বিদেশি জাহাজ এলেই গুলির নির্দেশ চীনের
চীনের সমুদ্রসীমায় অবৈধভাবে বিদেশি জাহাজ প্রবেশ করলে প্রয়োজন বা পরিস্থিতির দাবিতে ওই নৌযান লক্ষ্য করে জাতীয় কোস্ট গার্ড গুলি করতে পারবে- এমন একটি আইন সম্প্রতি পাস করেছে চীনের পার্লামেন্ট।
শুক্রবার চীনের পার্লামেন্টে পাস করা ওই আইনে বলা হয়েছে,‘ চীনের সার্বভৌমত্ব, স্বাধিকারের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে, এমন কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নৌযান যদি দেশের সমুদ্রসীমায় প্রবেশ করে, সেক্ষেত্রে দেশের সার্বভৌমত্বকে সমুন্নত রাখতে আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহারসহ যে কোনও পন্থা অবলম্বর করতে পারবে কোস্ট গার্ড।’
বিজ্ঞাপন
পূর্বচীন সাগরে চীনের জলসীমা নিয়ে জাপান এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দেশের সঙ্গে চলমান বিরোধের মধ্যেই এ আইন পাস করল দেশটির সরকার।
ওই সাগরে চীনের জলসীমার মধ্যে কোনো মাছধরা জাহাজ এলেও সেটিকে তাড়া করে সীমানার বাইরে পাঠিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়ে ওই আইনে বলা হয়েছে, প্রয়োজনে ওই সব জাহাজ ডুবিয়ে দেয়া যেতে পারে।
বিজ্ঞাপন
চীনে পার্লামেন্টের শীর্ষ আইনপ্রণেতাদের সংঘ ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেস স্ট্যান্ডিং কমিটি শুক্রবার এই আইন পাস করেছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম।
পূর্ব চীন সাগর এবং দক্ষিণ চীন সাগরে জনমানবশূন্য বেশ কয়েকটি দ্বীপ রয়েছে। দক্ষিণ চীন সাগরের দ্বীপগুলো চীনের দখলে থাকলেও পূর্ব চীন সাগরের দ্বীপগুলো রয়েছে প্রতিবেশী দেশ জাপানের দখলে। ওই দ্বীপগুলোর দখল পেতে বেশ কয়েক বছর ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে চীন।
দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর কোস্ট গার্ড বা জল পুলিশ বাহিনীর মধ্যে অস্ত্র,সাজ-সরঞ্জাম এবং জনবলের দিক সবচেয়ে শক্তিশালী চীনের কোস্ট গার্ড বাহিনী। দ্বীপগুলোর দখল পেতে কোস্ট গার্ডকে আরো তৎপর করার জন্যই চীনের পার্লামেন্ট এই আইন পাশ করেছে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকরা।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনয়িং আইন সম্পর্কে বলেছেন, ‘খুব দ্রুত এই আইন বাস্তবায়েনের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।’
এর আগে দক্ষিণ চীন সাগরের দখল পেতে `নাইন ড্যাশ লাইন' আইন প্রণয়ন করেছিল চীনের পার্লামেন্ট। সে আইনে সাগরের বেশিরভাগ এলাকাই চীনের অন্তর্ভূক্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল।
তবে এরপর দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দেশ নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরের আন্তর্জাতিক আদালতে এ নিয়ে মামলা করলে আদালতের নির্দেশে তা বাতিলে বাধ্য হয় চীন সরকার।
সূত্র: আলজাজিরা
এসএমডব্লিউ