• বিমানবাহী মার্কিন রণতরীর উপস্থিতির মধ্যেই সামরিক মহড়ার ঘোষণা
• চলতি সপ্তাহেই এই মহড়া অনুষ্ঠিত হবে
• জানানো হয়নি মহড়ার ব্যাপ্তি
• দক্ষিণ চীন সাগর দিয়ে প্রতিবছর হয় ট্রিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য
• বিতর্কিত ওই এলাকার মালিকানা চায় ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, ব্রুনাই ও তাইওয়ানও

বিমানবাহী মার্কিন রণতরীর উপস্থিতির মধ্যেই দক্ষিণ চীন সাগরে সামরিক মহড়ার ঘোষণা দিয়েছে বেইজিং। চলতি সপ্তাহেই এই মহড়া অনুষ্ঠিত হবে বলে মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) জানিয়েছে দেশটি। দক্ষিণ চীন সাগরে মার্কিন রণতরীর উপস্থিতি নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানানোর পরদিনই সামরিক মহড়ার ঘোষণা দিল এশিয়ার এই পরাশক্তি দেশটি।

মহড়ার বিষয়ে মঙ্গলবার এক বিবৃতি প্রকাশ করেছে চীনের মেরিটাইম সেফটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। ওই বিবৃতিতে ২৭ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত দক্ষিণ চীন সাগরের তোনকিন উপসাগর এলাকা থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় লেইঝু উপত্যকা এলাকায় সর্বসাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তবে কতটা সময় ধরে ওই সামরিক মহড়া চলবে বা মহড়ার ব্যাপ্তি কতটা হবে সে বিষয়ে বিবৃতিতে কিছু জানানো হয়নি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শপথ নেওয়ার দু’দিন পর সমুদ্রে ‘অবাধ বিচরণের ধারণা’ এগিয়ে নিতে যুদ্ধবিমানবাহী ইউএসএস থিওডর রুজভেল্ট রণতরীর নেতৃত্বে একটি বহর শনিবার দক্ষিণ চীন সাগরে প্রবেশ করে। মার্কিন এই নৌবহরে তিনটি যুদ্ধজাহাজও রয়েছে। মার্কিন সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে এই রণতরীর বহর চীন সাগরে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

এরপরই সোমবার কড়া প্রতিক্রিয়া জানায় চীন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাষায়, ‘যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ চীন সাগরে নিজেদের শক্তির জানান দিতে প্রায়ই বিমান এবং যুদ্ধজাহাজ পাঠাচ্ছে; যা শান্তির জন্য ভালো কিছু নয়।’

কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ দক্ষিণ চীন সাগর দিয়ে প্রত্যেক বছর ট্রিলিয়ন ডলারের বাণিজ্যিক পণ্য পরিবহন হয়। এই সাগরের বিতর্কিত জলসীমা নিয়ে ওয়াশিংটন এবং বেইজিংয়ের দীর্ঘদিনের বিবাদ রয়েছে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর তৎপরতায় চীন প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ।

দক্ষিণ চীন সাগরে নিজেদের দখলকৃত দ্বীপের একেবারে কাছে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর জাহাজ চলে আসছে বলে প্রায়ই অভিযোগ করছে চীন। একই জায়গার মালিকানা ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, ব্রুনাই এবং তাইওয়ানও দাবি করে।

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন ক্ষমতায় আসার কয়েকদিনের মধ্যে এই দ্বীপে চীন-তাইওয়ানের তুমুল উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন তাইওয়ানকে জোরাল সমর্থন দেয়ার পাশাপাশি অস্ত্রও বিক্রি করেছে। এছাড়া গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ একাধিক কর্মকর্তা তাইওয়ান সফর করায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল চীন।

গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত তাইওয়ানকে নিজ ভূখণ্ড বলে দাবি করে চীন। গত কয়েক মাসে এই দ্বীপের আশপাশে সামরিক কার্যক্রম বৃদ্ধি করেছে দেশটি। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে এই দ্বীপের আশপাশে সাধারণ বিমানের চলাচল অব্যাহত রেখে শত্রুপক্ষের ওপর নজরদারি চালালেও গত কয়েকদিন ধরে যুদ্ধ এবং বোমারু বিমান মোতায়েন করেছে চীন।

সূত্র: আলজাজিরা

টিএম