বিশ্বব্যাপী মার্কিন কূটনীতি পুনর্গঠনে অঙ্গীকার ব্লিনকেনের
নিজের কার্যালয়ে প্রথম কর্মদিবসে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগী দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনর্গঠনের অঙ্গীকার করেছেন দেশটির নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।
যুক্তরাষ্ট্রের শাসনতান্ত্রিক প্রথা অনুযায়ী দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিন শপথ নিতে হয় সরকারের মন্ত্রীদের। সে অনুযায়ী স্থানীয় সময় বুধবার সকালে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কার্যালয়ে পৌঁছে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে ব্লিনকেন জানান, জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ, গণতন্ত্রের অবক্ষয় ও বিভিন্ন জটিল সমস্যা কবলিত এই বিশ্বকে এখনও নেতৃত্ব দিতে সক্ষম যুক্তরাষ্ট্র।
বিজ্ঞাপন
দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময় সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা ব্লিনকেন যখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কার্যালয়ে পৌঁছান, তাকে হাততালি দিয়ে স্বাগত জানান মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তারা।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘বিশ্ব এখন নিবিড়ভাবে আমাদের দেখছে। তারা জানতে চায়, আমরা আমাদের অতীতের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম কিনা….এবং বর্তমান বিভিন্ন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমরা আমাদের বন্ধু ও সহযোগী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠন করতে পারব কিনা।’
বিজ্ঞাপন
অনুষ্ঠানে নিজ বক্তব্যে করোনা মহামারি, জলবায়ু পরিবর্তন, বৈশ্বিক অর্থনীতির সংকট, গণতন্ত্রের অবক্ষয়, বর্ণবাদ, বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়াকে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেন ব্লিনকেন।
তবে এই চ্যালেঞ্জগুলোর ক্ষেত্রে কোনটিকে তিনি এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন- উপস্থিত সাংবাদিকরা এ প্রশ্ন করলে তা এড়িয়ে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পূর্ববর্তী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘আমেরিকা প্রথম’ নীতি ওয়াশিংটনের পুরোনো ও পরীক্ষিত মিত্রদের বিভ্রান্ত করেছে এবং গত ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটলে ট্রাম্পের উগ্র সমর্থকদের হামলার ঘটনায় গোটা বিশ্বের সামনে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে করেছে কলঙ্কিত।
বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলায় মিত্র ও সহযোগী দেশগুলোর সঙ্গে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ জোট গঠনে দেশের পররাষ্ট্র বিভাগকে অবশ্যই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে উল্লেখ করে ব্লিনকেন বলেন, ‘ এই মন্ত্রণালয়…চার বছর পর আজ আমি এখানে এলাম। যে অবস্থায় আমি দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ছেড়ে গিয়েছিলাম, আজ আর এটি তেমন নেই…অনেক কিছু বদলে গেছে এই চার বছরে…বিশ্ব বদলে গেছে, পরিবর্তন এসেছে এই বিভাগেও। তবে যেটি গুরুত্বপূর্ণ- বিশ্ব এখন নিবিড়ভাবে আমাদের পর্যবেক্ষণ করছে। তারা জানতে চায়, আমরা আমাদের জাতিকে আরোগ্য করে তুলতে পারি কিনা।’
যুক্তরাষ্ট্রের অভিজ্ঞ কূটনীতিক অ্যান্টনি ব্লিনকেনকে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগদানের প্রস্তাব করেছিলেন দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মার্কিন পার্লামেন্ট কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের ৭৮ টি ভোট পেয়ে তিনি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন ব্লিনকেন।
সূত্র: রয়টার্স
এসএমডব্লিউ